আসানসোল : সপ্তম জাতীয় তাইকোন্ড প্রতিযোগিতায় নজরকাড়া চমক দিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটির তিন যমজ বোন।
কুলটির শাঁকতোড়িয়ার বাসিন্দা তিন বোনের নাম হল সুচেতা চট্টোপাধ্যায় ,রঞ্জিতা চট্টোপাধ্যায় ও সুপ্রিতা চট্টোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদিত সপ্তম জাতীয় তাইকোন্ড চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় তিন বোন জিতলো চারটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ পদক।
গত ২৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি তেলঙ্গনার হায়দরাবাদে এই জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
কুলটির বাসিন্দা এই তিন বোন এখন ডিসেরগড় গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। পড়াশোনার বাইরে সুচেতা, রঞ্জিতা ও সুপ্রিতা নাচ গানে সঙ্গে তাইকোন্ডতে সমান পারদর্শী। এই খেলায় তাদের পারফরম্যান্স অত্যন্ত ভালো।

তিনজনের বাবা পেশায় গৃহশিক্ষক বামাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “একসঙ্গে যখন আমার এই কন্যা পৃথিবীর আলো দেখেছিল তখন তাদের ওজন অত্যন্ত কম ছিল। তিনজনের সবমিলিয়ে ওজন ছিল মাত্র তিন কেজি। ফলে তাদেকরকে স্বাভাবিক করে তুলতে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছিল বেশ কিছুদিন। একই সঙ্গে তিন কন্যাকে জন্ম দেওয়ায় আমার স্ত্রীকেও বিভিন্নভাবে গঞ্জনা শুনতে হয়েছিল। সেই আমার তিন মেয়ে জীবনে পথ চলার চ্যালেঞ্জে তাইকোন্ডকে বেছে নেয়। প্রথমে তারা জাতীয় স্তরের সাব জুনিয়র প্রতিযোগিতায় ( ২০২২ – ২৩) তিনজনই ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিল। এরপর (২০২৩-২৪) জাতীয় তাইকুন্ড প্রতিযোগিতাতে তিনটি সোনা ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিল। এবার ওদের পারফরম্যান্স আগের তুলনায় আরো ভালো হয়েছে। চারটে সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ পদক পেল তারা সপ্তম জাতীয় প্রতিযোগিতায়”।
বামাপ্রসাদবাবু আরো বলেন, আমার তিন মেয়ে এখন চায় আন্তর্জাতিক স্তরে গিয়ে নিজেদের পারফরম্যান্স গোটা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে। কিন্তু ওই জায়গায় যেতে গেলে প্রচুর টাকার দরকার। সেটা আমার মতো মানুষের তো নেই। সেক্ষেত্রে সরকার বা কোন সংস্থা যদি এগিয়ে এসে তাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে অবশ্যই তারা সাফল্য পাবে বলে বাবা হিসেবে তিনি মনে করেন।
তিন মেয়ের এই সাফল্যে অবশ্যই গর্বিত ও খুশি মা সুনেত্রা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ওরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি জাতীয় স্তরে তাইকোন্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আবারও যেভাবে চারটে সোনা ও একটা ব্রোঞ্জ পদক ছিনিয়ে আনল তা অবশ্যই অন্যান্যদেরকে উৎসাহিত করবে বলে তিনি মনে করেন।




Be First to Comment