অমল মাজি, এগ্জিকিউটিভ এডিটর, অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস
বিদ্যা, জ্ঞান ও সুরের দেবী সরস্বতীর পুজো পৌরাণিক যুগ থেকে চলে আসছে। শুধু বাংলা নয়, সারা দেশেই এই পূজা আয়োজিত হয় গভীর শ্রদ্ধা ও নিষ্ঠার সঙ্গে। সরস্বতী আরাধনার উল্লেখ পাওয়া যায় বেদ, পুরাণ, উপনিষদ, মনসা মঙ্গল কাব্য, চণ্ডী মঙ্গল কাব্য-সহ বহু প্রাচীন গ্রন্থে।
প্রাচীনকালে দেবী সরস্বতী মূলত যজ্ঞের দেবী হিসেবে পূজিতা হতেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন জ্ঞান, সুর ও আলোয়ের দেবী। বৈদিক যুগে গঙ্গা ও সরস্বতী নদীর তীরে যজ্ঞ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবীর আরাধনা করা হতো। দেবী বিভিন্ন নামে পূজিত হয়ে আসছেন— বাগদেবী, বীণাপাণি, অক্ষরময়ী, শতরূপা, বিদ্যাদায়িনী, শ্রীদেবী ইত্যাদি।

ভারতবর্ষ ছাড়িয়ে বিদেশেও দেবী সরস্বতীর পুজোর প্রচলন রয়েছে। জাপানে তিনি “বেনতেন সামা”, চিনে “ম্যোন-ত্যেং”, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে বিদ্যার দেবীকে বিভিন্ন নামে পূজা করা হয়।
বাংলায় দেবী সরস্বতী শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নয়, প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পূজিতা হন। শিশু থেকে প্রবীণ, প্রত্যেকেই জ্ঞানের দেবীর কাছে আশীর্বাদ কামনা করেন। “নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে…” মন্ত্রোচ্চারণে দেবীর আরাধনায় মেতে ওঠে গোটা দেশ।
এই পূজা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং তা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই পরম্পরা আজও অব্যাহত, বিদ্যা ও জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সমগ্র সমাজে।




Be First to Comment