চরম অস্থিরতা নেপালে। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করার পরও ক্ষোভ থামেনি। আগুন জ্বলছে রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায়, এমনকি বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়েছে অলির ব্যক্তিগত বাসভবনেও। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক জায়গায় জারি হয়েছে কার্ফু। এখন সবার একটাই প্রশ্ন—কে হবেন নেপালের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী? আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে এক তরুণ নেতার নাম—বলেন্দ্র শাহ।
ওলির সরকারের তরফে ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব-সহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর থেকেই ফুঁসে উঠেছে জেন জি প্রজন্ম। শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, সোশ্যাল মিডিয়া অনেকের কাছে রুজিরুটি। কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ইনফ্লুয়েন্সাররা এক নির্দেশেই হয়ে পড়েছেন বেকার। এই ক্ষোভেই রাজপথ দখল করেছে তরুণ সমাজ। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই সমর্থন জানিয়েছেন বলেন্দ্র। সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদী পোস্টে ভরসা দিয়েছেন তরুণদের, আশ্বাস দিয়েছেন সব রকমভাবে পাশে থাকার।
পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বলেন্দ্র শাহ ২০২২ সালে নির্দল প্রার্থী হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পান। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই হাত দেন সংস্কারে—রাস্তা মেরামত, সরকারি উদ্যোগে স্কুল নির্মাণ এবং কর ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা। এতে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সাধারণ মানুষের কাছে। তবে তাঁর আরেক পরিচয়ও আছে—তিনি র্যাপার। তরুণদের জীবন, স্বপ্ন আর প্রতিবাদ নিয়ে গান বাঁধেন ও মঞ্চে পরিবেশন করেন। সেই কারণেই আজকের প্রজন্মের কাছে তিনি শুধু নেতা নন, বরং কাছের মানুষ।
আন্তর্জাতিক মহলেও নজর কেড়েছেন বলেন্দ্র। টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে রেখেছে বিশ্বের ১০০ উদীয়মান নেতার তালিকায়। প্রশংসা করেছে নিউইয়র্ক টাইমসের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। আন্দোলনের মধ্যে রাজনৈতিক সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তিনি—“তরুণদের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রইল, তবে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থে এই আন্দোলনকে ব্যবহার করবেন না।”
আজ কাঠমান্ডুর রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের স্লোগানের সঙ্গে গর্জে উঠছে একটাই নাম—বলেন্দ্র শাহ। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি পরিবর্তনের প্রতীক। তাই প্রশ্ন জাগছে—তাঁকেই কি এবার নেতৃত্বে আনবে নেপাল?










