কোলফিল্ড টাইমস: ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতকে নিশানা করলেন। শুক্রবার তিনি নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের একসঙ্গে তোলা একটি ছবি শেয়ার করেন। সেই ছবির সঙ্গে ট্রাম্প লিখেছেন, “মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে চিনের কাছে হারিয়েছি। ওদের দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ হোক”।
চিনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে মোদী, পুতিন এবং জিনপিংয়ের সৌহার্দ্যপূর্ণ মুহূর্তকে অনেকেই নতুন বিশ্বব্যবস্থার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতের উপর শুল্ক বাড়াচ্ছে, সেই সময় এই তিন দেশের ঘনিষ্ঠতা ওয়াশিংটনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, একসময় ট্রাম্প ও মোদীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তা এখন শেষ হয়ে গেছে। তাঁর কথায়, ব্যক্তিগত সম্পর্ক সব সময় কাজে আসে না। ট্রাম্প ও মোদীর সম্পর্কই তার বড় উদাহরণ।
গত মাসে ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন। রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে অসন্তোষের জেরে ২৫ শতাংশ বেস ট্যারিফের উপর আরও ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক চাপানো হয়েছে। একই সময়ে চিন উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করলেও তা আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এর ফলে ভারত, রাশিয়া ও চিনের মধ্যে নতুন সমঝোতা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গলওয়ান সংঘাতের পর ভারত-চিন সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। তবে সাত বছর পর প্রধানমন্ত্রীর এই চিন সফরে সেই উত্তাপের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। বরং তিয়ানজিনে শি জিনপিং মোদীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। বৈঠকে সীমান্ত সমস্যা সমাধান ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
শি জিনপিং বলেন, বন্ধুত্ব করা জরুরি, ভালো প্রতিবেশী হওয়া দরকার, ড্রাগন আর হাতি একসঙ্গে এগিয়ে আসুক। এই বক্তব্যকে দুই দেশের সম্পর্কের বরফ গলার স্পষ্ট ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও ভারতকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করার প্রবণতাই নয়াদিল্লিকে চিন-রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ করছে। এটা শুধু কূটনৈতিক অবস্থান নয়, বহুমেরুবাদী বিশ্বব্যবস্থার দিকে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত।