উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: সিফরির উদ্যোগে সুন্দরবনের কুলতলীতে অনুষ্ঠিত হলো মহিলা মৎস্যজীবী সম্মেলন। আইসিএআর–সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ICAR-CIFRI), ব্যারাকপুরের আয়োজন এবং কুলতলী মিলন তীর্থ সোসাইটির সহযোগিতায় শনিবার এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু-সংবেদনশীল এই অঞ্চলে জীবিকা সুরক্ষায় নারী মৎস্যজীবীদের ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরা ছিল অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিএআরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (মৎস্য বিজ্ঞান) ড. জয়কৃষ্ণ জেনা। তিনি জানান, সুন্দরবনের জীবিকা ব্যবস্থায় মৎস্যচাষ কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মহিলা মৎস্যজীবীদের নিরলস পরিশ্রম স্পষ্ট করে। মাছ ও মৎস্যবিজ্ঞানের অগ্রগতি সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে দিতে আইসিএআর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ICAR-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (কৃষি বিস্তার) ড. রাজবীর সিং বলেন, মাছ ধরা, চাষ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণনে নারীদের সক্রিয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। নীল অর্থনীতির বিস্তারে সুন্দরবনের নারীদের জন্য নতুন জীবিকা এবং টেকসই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আইসিএআর–সিফরি-র পরিচালক ড. বি.কে. দাস জানান, গত এক দশকে গোসাবা, হিংলগঞ্জ, নামখানা, কাকদ্বীপ ও কুলতলী অঞ্চলে পুকুরভিত্তিক মাছচাষ, খাল-ভিত্তিক মৎস্যচাষ এবং অলঙ্কারিক মাছ উৎপাদনের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়া বিজ্ঞানভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে মহিলা মৎস্যচাষীদের আরও ক্ষমতায়ন করাই তাঁদের লক্ষ্য।

এদিন প্রায় ৬০০ জন তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলা মৎস্যচাষীর হাতে মাছের পোনা ও খাদ্য তুলে দেওয়া হয়। গোসাবা ও বাসন্তী ব্লকের ১৭টি পঞ্চায়েতের ৩৮টি গ্রামের উপকারভোগীরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কা সামলেও সুন্দরবনে মৎস্যচাষ এখনও প্রধান জীবিকা হিসেবে টিকে রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে SCSP/TSP প্রকল্পে ৫,৫০০-র বেশি মৎস্যজীবীকে ক্ষুদ্র পরিসরে মৎস্য ও অলঙ্কারিক মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে সিফরি। অনুষ্ঠানে মৎস্যখাতে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারও প্রদর্শিত হয়।










