উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: কুমিরের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের ভয়ংকর লড়াই শেষে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার প্রণতি প্রামানিক। সেই সাহসিনীর পাশে এবার দাঁড়ালেন কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির সদস্যরা।
ঘটনাটি ঘটেছিল কয়েক দিন আগে, পাথরপ্রতিমা ব্লকের অশ্বিনী মাইতির খেয়াঘাট সংলগ্ন নদীতে। প্রতিদিনের মতোই সেদিনও নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন প্রণতি। আচমকাই নদী থেকে উঠে এসে তাঁকে আক্রমণ করে এক কুমির। প্রায় এক ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুদ্ধি ও সাহসের জোরে কুমিরের হাত থেকে মুক্তি পান তিনি। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাথরপ্রতিমার মাধবনগর গ্রামীণ হাসপাতালে।
স্বামীর অবহেলায় ভাঙা ঘরে দুই মেয়েকে নিয়ে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছিলেন প্রণতি। বড় মেয়ে একাদশ শ্রেণির, ছোটটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য হওয়ায় নদীতে নেমেই চলত সংসার। কিন্তু এখন আহত অবস্থায় সেই পথও বন্ধ।
এই কঠিন সময়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালেন কলকাতার ওই মহিলা সমিতির সদস্যরা। তাঁরা আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি দুই মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রণতিকে দেওয়া হবে মাসে ১০০০ টাকা করে ভাতা ও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী।
এই সহায়তা পেয়ে আনন্দে চোখ ভিজে উঠেছে প্রণতির। সুন্দরবনের এই সাহসী গৃহবধূর মুখে এখন একটাই কথা — “মানুষ এখনও মানুষকে ভালোবাসে, এই বিশ্বাসটাই ফিরে পেলাম।”










