চিত্তরঞ্জন : এক বছর ধরে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করার পরেও ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চিত ১২জন নিরাপত্তারক্ষীর।
চিত্তরঞ্জন রেল শহরের কেজি হাসপাতালে কর্মরত এই নিরাপত্তারক্ষীরা শনিবার হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে রেল প্রশাসনের কাছে একটি মানবিক আবেদন জানান, তাদের যেন পুনরায় কাজে নিযুক্ত করা হয়।
এই ১২জন কর্মী, যাঁদের মধ্যে আছেন দীপক গোপ, তারাশঙ্কর দা, অভিজিৎ মণ্ডল, নরেশ প্রসাদ সহ আরও অনেকে। তারা জানান, তাঁরা কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা ‘এন.এস.এস’-এর মাধ্যমে গত এক বছর ধরে হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, গত পাঁচ মাস ধরে তাঁরা বেতন পাননি। নিয়ম অনুযায়ী পেনশন ফান্ড (পি.এফ) এবং স্বাস্থ্যবিমা (ই.এস.আই) সুবিধাও ঠিকভাবে পাননি।
তবুও তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাদের বক্তব্য, “আমরা গরীব ঘরের সন্তান। এই কাজটাই আমাদের পরিবার চালানোর একমাত্র ভরসা।”
বর্তমানে হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব একটি নতুন ঠিকাদার সংস্থার হাতে চলে যাওয়ায় তাঁদের কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।নতুন ঠিকাদার তাঁদের নিয়োগ করবে কিনা,তা অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তা দূর করতেই তাঁরা রেল প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
তাঁদের আবেদন, “আমরা আবারও সেই কাজ করতে চাই। আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, নিষ্ঠা আছে, শুধু একটা সুযোগ চাই।”
এই পরিস্থিতি কেবল কিছু কর্মীর কাজ হারানোর ভয় নয়, এটি এক বৃহৎ মানবিক সংকটের প্রতিচ্ছবি। যেখানে শ্রমের মর্যাদা হারাচ্ছে ঠিকাদারী ব্যবস্থার গোলকধাঁধায়।
এমন এক সময় যখন সরকার এবং সংস্থাগুলো ‘শ্রমিক কল্যাণ’ নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা বলছে, তখন এই নিরাপত্তারক্ষী দের দুর্দশা যেন সেই নীতির বাস্তব প্রতিফলনের অভাবকেই সামনে এনে দেয়।
রেল প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, এই কর্মীদের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে তাঁদের পুনরায় কাজে নিযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হোক।কারণ, এক বছরের নিষ্ঠার পুরস্কার হতে পারে না অনিশ্চয়তা।