অভিষেক সেনগুপ্ত, জলপাইগুড়ি: শিক্ষিকা-হেনস্থার বিতর্কের আবহেই শুক্রবার পুরপ্রধান হিসেবে শপথ নিলেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। এ দিকে শিক্ষিকা হেনস্থার ঘটনায় ডিআই অফিস অভিযান করল নবগঠিত শিক্ষা বাঁচাও মঞ্চ। সত্য উন্মোচনের দাবিতে স্মারকলিপি দিল অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘ।
শহরের সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে তার চেম্বারে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। মাস দশেক আগের সেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সম্প্রতি পোস্ট করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই শোরগোল পড়ে যায় জেলার বিভিন্ন মহলে। নিন্দার ঝড় ওঠে। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করেন ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা তৎকালীন উপ-পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তার দাবি, এআই দিয়ে ওই ফুটেজ তৈরি করা হয়েছে। এ দিকে, নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন।
শুক্রবার সৈকতের পুরপ্রধান পদে শপথ গ্রহণের দিনই এই শহর ও সদর ব্লকে ‘শিক্ষা ধর্মঘটের’ ডাক দেন শিক্ষা বাঁচাও কমিটির নেতারা। এ দিন স্কুলগুলিতে পড়ুয়া কম এসেছে বলেও দাবি সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক কৌশিক গোস্বামীর। ডিআই(মাধ্যমিক) কে স্মারক লিপি দিয়ে ওই ফুটেজের সত্যতা যাচাই ও কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানান হয়। কৌশিক বলেন, “আমরা জোর করে ধর্মঘট সফল করিনি। আবেদন রেখেছিলাম। পড়ুয়া কম এসেছে বহু স্কুলে৷ মিশ্র ভাবে সফল আমাদের কর্মসূচি। ডিআই স্যারের সঙ্গেও সদর্থক আলোচনা হয়েছে।”
এ দিন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘের তরফেও জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ছিলেন সংগঠনের রাজ্য যুগ্ম সহ-সম্পাদিকা কাকলি মণ্ডল বলেন, “এ ধরণের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রধান শিক্ষিকাই বা কেন কান ধরে ওঠবোস করলেও সেটাও প্রশ্ন। আমরা চাই প্রকৃত সত্য সামনে আসুক। দোষীর শাস্তি হোক।”
এ দিন পুরসভা চত্বরেই মঞ্চ করে পুর প্রধানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। সদর মহকুমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তীর হাত থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পুর প্রধানের দায়িত্বভার নেন সৈকত। উপ পুরপ্রধান হন সন্দীপ মাহাতো৷ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায়বর্মণ, কর্মাধ্যক্ষ তথা দলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, প্রাক্তন পুরপ্রধান পাপিয়া পাল-সহ অনেকে।
সৈকত বলেন, “শহরের পুর এলাকার বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে৷ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেগুলো শেষ করার চেষ্টা করব৷ পুর এলাকার সার্বিক উন্নয়ন, যানজট-মুক্তি আমাদের লক্ষ্য। পুর পরিষেবাকে আরও ভালো করার চেষ্টা করব।”










