চিত্তরঞ্জন: আবার ভাঙন পর্ব শুরু হচ্ছে চিত্তরঞ্জন রেল শহরে।
এবার শহরের বুকে থাকা ১৬ টি ক্লাবকে উচ্ছেদ করার জন্য চূড়ান্ত নির্দেশ জারি করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। ১৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ন’টা থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে তার আগে অনুমতিহীন এইসব নির্মাণ নিজেদেরই সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে রেল। বিজ্ঞপ্তিতে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ১৮ নভেম্বরের আগে এইসব কাঠামো নিজেদের উদ্যোগেই সরিয়ে ফেলতে হবে। তা না হলে রেল কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে এগুলি ভেঙে ফেলা হবে। ১ নভেম্বর এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এই নভেম্বর মাসে পুনরায় চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যেসব ক্লাব ঘর ভেঙে ফেলা হবে সেগুলিতে নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে শহরের চার পাঁচ এবং ছয়- এর পল্লী এলাকার ১৪ টি ক্লাব এবং তিনের পল্লী এলাকার দুটি ক্লাবকে এই দফায় ভেঙে ফেলবেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন সিআরএমসি নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং এবং লেবার ইউনিয়ন নেতা রাজীব গুপ্ত।
রাজীব বাবু বলেন চিত্তরঞ্জনকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে থাকা ক্লাবগুলি সামাজিক দায়-দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এরফলে এলাকার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং সম্প্রীতির ভাব বজায় আছে। ক্লাব ঘর না ভাঙার জন্য পিএনএম বৈঠকে আলোচ্য সূচী রাখা হয়েছিল। কিন্তু জেনারেল ম্যানেজার সেই বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, বিষয়টি তার হাতে নেই, পুরোটাই রেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হচ্ছে। রাজীব বাবু বলেন রেল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রয়োজন ছিল সক্রিয় জনপ্রতিনিধির। কিন্তু চিত্তরঞ্জনে তার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অন্যদিকে ইন্দ্রজিৎ সিং বলেন, সিদ্ধান্ত রেল বোর্ডের হলেও ক্লাবগুলির গুরুত্ব জেনারেল ম্যানেজার বুঝেছিলেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। তিনি বলেন, শহরের বুকে থাকা ক্লাবগুলির ভূমিকা বিরাট। প্রয়োজনের সময় বিপদের দিনে ক্লাবের সদস্যরা এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। সারা বছর তারা মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখেন। তাই ক্লাবগুলি ভাঙা হলে এলাকার বিরাট ক্ষতি হবে। ইন্দ্রজিৎ বাবু বলেন দিনের শেষে রেল কর্মীরা ক্লাবে গিয়ে খেলাধুলা বই পড়া গল্প গুজব করার মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলেন। এবার সেই সমস্ত সুযোগও রেল শেষ করে দিচ্ছে।
যদিও রেল কর্তৃপক্ষ অনুমোদনহীন কোনও নির্মাণ শহরের বুকে রাখতে নারাজ। বিভিন্ন এরিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্থা রাখা হচ্ছে যারা সামাজিক কর্মকান্ডগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এর আগেও বহু অনুমতিহীন বাসগৃহ দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছে। তখন রক্তদান আন্দোলনের মতো সামাজিক সংগঠনের কার্যালয়, নিয়মিত খেলাধুলা সাংস্কৃতিক চর্চায় যুক্ত ক্লাব ইত্যাদিকে ভাঙার উদ্যোগ নিলেও নানান আলাপ আলোচনায় রেল কিছুটা থেমে গিয়েছিল। কিন্তু এবার সেই সমস্ত পিছুটান কাটিয়ে রেল এক লপ্তে ১৬ টি ক্লাবকে ভেঙে দিতে উদ্যোগী হয়েছে।










