বার্নপুর: দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীকে শুক্রবার রাতে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার বিকেলে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্ব বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড় এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। এই বিক্ষোভে উপস্থিত থাকা বিপুল সংখ্যায় বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বসে আগুন জ্বালিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করেন ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক বলেন, পশ্চিমবঙ্গে নারীরা নিরাপদ নন এটা নতুন কিছু নয়। ওড়িশার একটি মেয়ে, সে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পড়তে এসেছিলেন। তাঁকেও নিরাপত্তা দেওয়া যায়নি। শুক্রবার তাকে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়। মেয়েটি শুক্রবার সন্ধ্যায় কলেজের কাছে একটি দোকানে খাবার কিনতে গিয়েছিলেন, তাঁর এক সহপাঠীর সঙ্গে। কিন্তু সেই সময় কিছু অপরাধী তাকে গণধর্ষণের শিকার করে।
অগ্নিমিত্রা পাল আরো বলেন, রাজ্য সরকার লক্ষ্মী ভান্ডার, কন্যাশ্রী ছাড়া অন্য প্রকল্পের কথা অনেক বলে এবং দাবি করে যে এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু এই ধরনের প্রকল্প নারীদেরকে কখনই ক্ষমতায়নের দিকে নিয়ে যায় না। কখন নারীর ক্ষমতায়ন ঘটবে, যখন একজন নারী বা মেয়ে নির্ভয়ে বাইরে বেরোতে পারবে, কাজ করতে এবং পড়াশোনা করতে পারবে। এমন কোনও ভয় থাকবে না যে তার সাথে যেকোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের নারী ও মেয়েদের সেই নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা দেবী দুর্গা, কালী এবং সরস্বতীর পূজো করেন। কিন্তু মেয়েদের মর্যাদার কোনও নিশ্চয়তা নেই যারা সত্যিকার অর্থে দেবী দুর্গা, দেবী কালী এবং দেবী লক্ষ্মীর মূর্ত প্রতীক। তিনি বলেন, এখন পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এমন হয়ে উঠেছে যে ২ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত সকলেই বিপদে পড়েছেন।
বিজেপি কর্মীরা এদিন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ক্রমাগত ঘটছে। কারণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ধর্ষণের রেট নির্ধারণ করেছেন। যে কারণে অপরাধীরা নির্ভীক হয়ে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, বিজেপি আর এসব সহ্য করবে না। বিজেপি কর্মীরা মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে। মানুষ এই প্রশাসনকে বিশ্বাস করে না। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে মানুষ রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের উপর এতটাই ক্ষুব্ধ যে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলা তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের পরাজয় নিশ্চিত।