সালানপুর ও আসানসোল : পথ দুর্ঘটনায় মোটরবাইক চালকের মৃত্যু ও তারপরে ক্ষতি পূরণের দাবি করে রাস্তা অবরোধ। সেই বিক্ষোভ তুলতে পুলিশের লাঠিচার্জকে ঘিরে বুধবার দুপুরে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটল আসানসোলের সালানপুর থানার আসানসোল চিত্তরঞ্জন রোডের দেন্দুয়া মোড়ে।
প্রায় ১৮ ঘন্টা ধরে চলে ক্ষতি পূরণ এবং চাকরির দাবিতে চলে এই রাস্তা অবরোধ বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ঘটে একটি পথ দুর্ঘটনা। এই পথ দুর্ঘটনায় মোটরবাইক চালক আসানসোলের সালানপুর থানার শ্রীরামপুরের বাসিন্দা অশোক মাহাতো (৫০) মারা যান। এলাকার বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আসানসোল কল্যানেশ্বরী রোড দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ মোটরবাইক করে যাচ্ছিলেন এলআইসি এজেন্ট অশোক মাহাতো। সেই সময় লোহার রড বোঝাই দ্রুতগামী একটি ট্রাক অশোকবাবুর মোটরবাইকে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কায় তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়েন এবং জখম হন। তাকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত বাইক চালকের পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা। তারা স্থানীয়দের সাহায্যে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে রাত থেকেই মৃতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় মানুষজনেরা দেন্দুয়া মোড়ে চিত্তরঞ্জন-আসানসোল রাজ্য সড়ক সম্পূর্ণ অবরোধ করেন।
সারা রাতের পরে বুধবার সকাল থেকেও চলে এই রাস্তা অবরোধ বিক্ষোভ । এর ফলে আসানসোল-চিত্তরঞ্জন রোডে বিশাল যানজট সৃষ্টি হয়। কয়েক কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন পড়ে যায় এই রাস্তায়।
পরিবারের সদস্য অবরোধকারীদের দাবি, মৃত মোটরবাইক চালকের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং দুজনকে চাকরি দিতে হবে।
ঘটনার খবর পেয়ে সালানপুর থানার বিশাল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নামানো হয় র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স।
প্রথমে পুলিশ অফিসাররা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত দুপুর দেড়টা নাগাদ পুলিশ খানিকটা বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে । এর পর ওই রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। রয়েছে পুলিশ।

পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ এই ঘটনা নিয়ে প্রথম থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিল। কোন কিছু করেনি। তার উপর, ওই পরিবারের পাশে না দাঁড়িয়ে পুলিশ নির্মম ভাবে লাঠিচার্জ করে। তাদের দাবি, পুলিশের এই লাঠি চার্জে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই রাস্তায় নিয়মিতভাবে ট্রাক ও বড় গাড়ি বেপরোয়াভাবে যাতায়াত করে। যে কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন সবকিছু দেখেও কিছু করেনা।
এদিকে, লাঠিচার্জের কথা পুলিশ অস্বীকার করেছে। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা কোনও কথা শুনতে চাইছিলেন না। তাই বল প্রয়োগ করে লাঠি উঁচিয়ে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।