উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর : শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় জয়নগরের মোয়ার মরশুম। আর সেই মোয়ার প্রধান উপাদান কনকচূড় ধান— এবার তা চাষ হচ্ছে জয়নগরেই। সরকারের সহায়তায় স্থানীয় কৃষকরা এই বিশেষ ধানের উৎপাদন শুরু করেছেন, ফলে খুশি মোয়া প্রস্তুতকারকরা।
এর আগে মোয়া ব্যবসায়ীদের দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি, কাশীনগর বা লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে কনকচূড় ধান সংগ্রহ করতে হতো, যাতে খরচ ও সময় দুই-ই বাড়ত। পাশাপাশি কম উৎপাদনের কারণে কৃষকরা এই ধানের চাষে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন। তবে জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের কৃষি দপ্তর ‘আতমা প্রকল্প’-এর আওতায় ব্যবসায়ীদের হাতে কনকচূড় ধানের বীজ তুলে দেয়। সেই উদ্যোগেই এবার স্থানীয়ভাবে ধান চাষ শুরু হয়েছে।
মোয়া ব্যবসায়ী খোকন দাস ও গণেশ দাস বলেন, “মোয়ার গুণগত মান কনকচূড় ধানের উপর নির্ভর করে। আগে এই ধান কম পাওয়া যেত বলে অনেকেই অন্য ধানের খই ব্যবহার করতেন। এখন স্থানীয়ভাবে ধান পাওয়া গেলে মানও বজায় থাকবে, খরচও কমবে।”
কৃষকদেরও উচ্ছ্বাস চোখে পড়ছে। জয়নগরের এক কৃষক জানান, “গত বছর তিন বিঘা জমিতে কনকচূড় ধান চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। তাই এ বছরও চাষ করেছি। এখন আর বাইরে থেকে ধান আনতে হবে না।”
কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটার কাজ শুরু হবে। এরপর ধান রোদে শুকিয়ে শিশিরে রেখে কড়াইয়ে বালিতে ভেজে খই তৈরি হবে— আর সেই খই দিয়েই তৈরি হবে সুবাসিত, মিষ্টি জয়নগরের মোয়া।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এবার থেকে মোয়ার গুণগত মান ও উৎপাদন দু’দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে, যাতে “জয়নগরের মোয়া” ব্র্যান্ডের ঐতিহ্য আরও মজবুত হয়।










