অভিষেক সেনগুপ্ত, জলপাইগুড়ি: আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে পুজোর ছুটির মধ্যেই। পুরোদস্তুর কাজ শুরু হল এ সপ্তাহ থেকে। এলাকার দুঃস্থ পরিবারের পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যের কোচিং সেন্টার খুলে শিশুদের পড়াশোনার খামতি মেটানোর উদ্যোগ নেন শহর লাগোয়া সানুপাড়ার জনাকয়েক যুবতী। এই দলে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছেন আনন্দচন্দ্র কলেজের এক অতিথি অধ্যাপিকাও। পড়াশোনার পাশাপাশি ওই কেন্দ্র থেকে নিখরচায় নাচ, গান, আবৃত্তিও শিখতে পারবে শিশুরা।
শহর লাগোয়া এলাকা হলেও পড়াশোনার ক্ষেত্রে নানা কারণে পিছিয়ে রয়েছে সানুপাড়া, কোরানিপাড়ার খুদেদের একাংশ। অনেক পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় বাইরে টিউশন করাতে পারেন না। অনেক খুদেই পরিবারের ‘প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী’ হওয়ায় বাড়িতে তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। আবার,অনেক বাবা, মায়েরা দিনভর কাজে ব্যস্ত থাকায় শিশুদের পড়াশোনার প্রতি সে ভাবে নজর দিতে পারেন না। স্কুলে একগাদা পড়ুয়ার মাঝে অনেক শিশুই সঙ্কোচের কারণে খামতির কথা জানাতেও পারে না। খুদেদের পড়ার ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে এলেন সানুপাড়ার বাসিন্দা তথা এক কলেজের গেস্ট লেকচারার উজ্জ্বলী ঘোষ, তিতলি সূত্রধর, রিয়া শীল-সহ জনাকয়েক যুবতী। স্থানীয় এক ভবনে ছায়া নিকেতন বিদ্যামন্দিরের সূচনা করলেন তাঁরা।
সম্প্রতি ওই কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক সূচনায় হাজির ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য গণেশ ঘোষ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা তথা সমাজসেবী বনানী মুখোপাধ্যায়-সহ অনেকে। অনুষ্ঠানে ওই এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ছায়া ঘোষ, সমাজসেবী বাপ্পা গুহ-সহ জনাকয়েককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় শিশুরা। ইতিমধ্যেই সব মিলিয়ে ১৯-২০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। আরও অনেকে যোগাযোগ করছেন বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। এখন পাঠদানের রুটিন, আবৃত্তি, নাচ, গানের ক্লাস কবে, কীভাবে হবে সে সব রুটিন তৈরি করছেন তাঁরা।

অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা উজ্জ্বলী বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই পরিকল্পনা করছিলাম। নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদের অনেকেই আর্থিক কারণে ইচ্ছে থাকলেও নাচ, গান, আবৃত্তি শিখতে পারে না। এখানে পড়ার পাশাপাশি সে সবও শেখান হবে। প্রয়োজন মতো শিক্ষা সামগ্রীও আমরা দেব।” গণেশ বলেন, “আমাদের এলাকায় এ ধরণের কেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল। পড়ার পাশাপাশি ছোট থেকেই শিশুরা সংস্কৃতিমনস্ক হয়ে উঠবে।”










