কোলফিল্ড টাইমস: দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়ার সহপাঠী ওয়াসিফ আলিকে। বুধবার সকালে সহপাঠীকে ওয়াসিফ আলিকে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে। ঘটনার আরো তদন্তে তাকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়।
এদিন অবশ্য আগের ৫ জনের মতো ধৃতর হয়ে সওয়াল করার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের কোনও আইনজীবি এজলাসে যাননি। এই প্রসঙ্গে দুর্গাপুর বার এ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি চন্দন বন্দোপাধ্যায় এদিন বলেন, এটা খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। কোনও আইনজীবী এই মামলায় ধৃতদের হয়ে দাঁড়াতে চাইছেন না। এটাই আইনজীবিদের সিদ্ধান্ত।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো এদিন ধৃতর হয়ে এজলাসে ছিলেন মহকুমা লিগ্যাল সার্ভিসেসের (এসডিএলএস) আইনজীবি পুজা দেবী। এই প্রসঙ্গে পুজা দেবী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, কোনও অভিযুক্তর হয়ে কোনও আইনজীবী যদি না থাকেন, সেক্ষেত্রে ডিএলএসকে আইনি সহায়তা দিতে হবে। এক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। যদি, পরে তার হয়ে কোনও আইনজীবী আসেন, তখন আমরা সরে দাঁড়াব”।
এদিন এজলাসে বিচারক এই মামলার আইও বা তদন্তকারী অফিসারের কাছে জানতে চান, আপনি কি চাইছেন? তখন আইও বলেন, আমরা অভিযুক্তর মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে চাই। তখন তার অনুমতি দেন। এর পাশাপাশি বিচারক পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে ধৃতর জামিন নাকচ করে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত ওয়াসিফ আলি মালদহের কালিয়াচক থানার সিলামপুরের বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ৫ জনের মধ্যে তিনজন ১০ দিন ও বাকি দুজন ৯ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে আগেই বিএনএসের ৭০(১) / ৩(৫) নং ধারা দিয়েছিল। বুধবার নতুন করে আরো দুটি ধারা যোগ করা হয়েছে। সেগুলি হলো বিএনএসের ৩০৪(২) ও ৩০৮(২) নং ধারা।
মঙ্গলবার সকালে ধৃত ৫ জন ও সহপাঠীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ রিকনস্ট্রাকশন বা পুনর্নির্মাণ করেছিলো পুলিশ। সন্ধ্যায় আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছিলেন নির্যাতিতার সহপাঠীর আচরণ সন্দেহজনক। তাকে জেরা করা হচ্ছে। এর ঠিক একঘণ্টা পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে নিউটাউন শিপ থানার পুলিশ। পুলিশ কমিশনার একইসাথে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণ করা হয়নি। একজনই তাঁকে ধর্ষণ করেছে।
কিন্তু, সেই একজন কে তা পুলিশ এখনো প্রকাশ্য বলতে পারেনি। ধৃত ৬ জনের মেডিক্যাল পরীক্ষা ও ফরেনসিক পরীক্ষার পরে জানা যাবে।