আসানসোল: দুই বছরেরও বেশি সময়ের বকেয়া এবং নিয়মিত বেতন বন্ধ— এই দুই দাবিকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলের এসবি গড়াই রোডের বিবেকানন্দ পল্লীতে পিএইচই দফতরে একযোগে আন্দোলনে নামে ঠিকাদার এবং ঠিকা কর্মীরা। প্রায় একই সময়ে দুটি সংগঠন আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় পিএইচই দফতর কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
দুপুর বারোটা থেকে পিএইচই কন্ট্রাক্টর্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে শুরু হয় ঠিকাদারদের অবস্থান-বিক্ষোভ, যা চলে দুপুর দুটো পর্যন্ত। সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, অসিত মল্লিক, উদ্ভব দাঁ-সহ একাধিক ঠিকাদার। অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে পিএইচই দফতর থেকে কোনও বিল দেওয়া হয়নি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মতো পশ্চিম বর্ধমানেও শতাধিক ঠিকাদার বকেয়া নিয়ে বিপদে। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, মোট বকেয়ার অঙ্ক প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। এর ফলে প্রায় ১২০০-র বেশি কর্মীর বেতন বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘প্রশাসন যদি দ্রুত পাওনা মেটায় না, ভবিষ্যতে জল সরবরাহ বিঘ্নিত হলে তার দায় ঠিকাদারদের নয়।’’
ঠিকাদারদের আন্দোলনের পাশাপাশি, অল বেঙ্গল পিএইচই কন্ট্রাক্টর্স এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের ডাকে ঠিকা কর্মীরাও বেতন না পাওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে সামিল হন। তাঁদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়নের সম্পাদক বন্দনা রায়। অভিযোগ, বহু কর্মী এখনও সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর— দুই মাসেরই বেতন পাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের দৈনিক মজুরি মাত্র ৪৬৫ টাকা। তাও সময়মতো দিচ্ছে না দফতর। ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে গেলে স্পষ্ট কোনও উত্তর মিলছে না।’’
বন্দনা রায় জানান, বুধবারও তাঁরা জুবিলি মোড়ের পিএইচই অফিসে বিক্ষোভ করেছিলেন, কিন্তু সমাধান হয়নি। বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভেও কর্তৃপক্ষ কোনও আশ্বাস দেননি। তিনি জানান, ‘‘যতদিন না অক্টোবরের বেতন মিটবে এবং ভবিষ্যতে সময়মতো বেতন দেওয়ার নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।’’
এ দিন পিএইচই দফতরে বিপুল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশি উপস্থিতি দেখে প্রশ্ন তোলেন বন্দনা রায়— ‘‘কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে এত পুলিশ কেন? মনে হচ্ছে যেন আমরা সন্ত্রাসবাদী, পিএইচই কর্মী নই।’’










