উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, বারুইপুর: নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকা — সব মিলিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসক থেকে রোগী সকলের মধ্যেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি সমস্ত সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিলেও বারুইপুরের এই দুই হাসপাতালে তার প্রতিফলন নেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে রয়েছে মাত্র ১৩টি সিসি ক্যামেরা এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ১৮টি — অর্থাৎ মোট ৩১টি ক্যামেরা। অথচ, গত বছরে পিডব্লুডি আইটি দপ্তর এবং ডব্লুবিএমএসসিএল কর্তৃপক্ষের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, দুটি হাসপাতালে মিলিয়ে অন্তত ১০৬টি সিসি ক্যামেরা থাকা প্রয়োজন — মহকুমা হাসপাতালে ৪০টি এবং সুপার স্পেশালিটিতে ৬৬টি।
নজরদারির পাশাপাশি নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমানে মহকুমা হাসপাতালে দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র ছ’জন নিরাপত্তারক্ষী। বারুইপুর জেলা পুলিশের সিকিউরিটি অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, সেখানে অন্তত ৪০ জন নিরাপত্তারক্ষী প্রয়োজন। কিন্তু সেই সুপারিশের পরেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি।
বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডা. ধীরাজ রায় বলেন, “সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন।”
হাসপাতালের চিকিৎসকদের অভিযোগ, রাতে মহকুমা হাসপাতাল থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যাওয়ার পথের গেট খোলা থাকে, যা নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় গেট বন্ধ রাখাও সম্ভব হচ্ছে না।
প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী এই দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। সুন্দরবনের মৈপীঠ, কুলতলি, জয়নগর থেকে শুরু করে সোনারপুর, মগরাহাট, বিষ্ণুপুর ও বারুইপুরের মানুষ এই হাসপাতালের উপরই নির্ভরশীল।
২০২৪ সালে আরজিকর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদারের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, বারুইপুরে তা বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোগীদের পরিবারগুলির দাবি, “হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকলে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাগুলির সমাধান করা উচিত প্রশাসনের।”










