কোলফিল্ড টাইমস : জল ছাড়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে মোট ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি— যার মধ্যে পাঞ্চেত জলাধার থেকে ২৩ হাজার কিউসেক এবং মাইথন জলাধার থেকে ১২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে।
এই জল ছাড়ায় আপাতত নতুন করে প্লাবনের আশঙ্কা কমেছে দামোদর অববাহিকার জেলাগুলিতে। প্রশাসনের দাবি, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাওয়ায় জল ছাড়ার হারও হ্রাস করা হয়েছে। ফলে হাওড়া ও হুগলির নিম্ন অববাহিকা এলাকায় নতুন করে জল জমার সম্ভাবনা আপাতত নেই।
তবে রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার ও শাসক দল। মঙ্গলবারই মাইথনে ডিভিসি-র দফতরের সামনে বিক্ষোভ ও ধর্নায় বসছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর।
পুজোর মরসুমে হঠাৎ জল ছাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ডিভিসি ইচ্ছাকৃতভাবে জল ছেড়ে বাংলাকে সমস্যায় ফেলছে। সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, এটি ‘একতরফা ও পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত’।
এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী সি. আর. পাতিল মুখ্যমন্ত্রীর দাবি খারিজ করেন। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার কথা বলেছেন, প্রকৃত সংখ্যা তার অর্ধেকেরও কম। পাতিল দাবি করেন, মাইথন থেকে ৪২,৫০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ২৭,৫০০ কিউসেক— মোট ৭০,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, যা ‘ডিভিসি রেগুলেশন কমিটি’-র তথ্য অনুযায়ী।
গত সপ্তাহে অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে দামোদর অববাহিকার একাধিক এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। শিলাবতী নদীর জলস্তর বৃদ্ধিতে ঘাটাল মহকুমার কয়েকটি এলাকা ইতিমধ্যেই জলমগ্ন, তবে এখনো পূর্ণাঙ্গ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে প্রশাসন। প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।
ডিভিসির জল ছাড়ার পরিমাণ কমানোয় আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। তবে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে জল ছাড়াকে কেন্দ্র করে সংঘাত অব্যাহত।