আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) কার্যক্রম শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন — কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও রাজ্য সিইওদের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে এই বিষয়ে প্রস্তুতি ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের ফুলবেঞ্চের নেতৃত্ব দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার, সুখবীর সিং সান্ধু ও বিবেক যোশী। কমিশন প্রথম ধাপে বিশেষত ভোটার তালিকা সংশোধনের দিক থেকে ভোট হতে যাওয়া পাঁচ রাজ্য—পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও কেরলকে অগ্রাধিকার দেবে বলে জানা গেছে।
কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, এসআইআর-এর সময়সূচি নির্ধারণে এসব রাজ্যের সিইওদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বিস্তারিত ভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে — বিশেষত আগের বার যে নিবিড় সংশোধন করা হয়েছিল তার ভোটার তালিকার সঙ্গে বর্তমান তালিকার মিল (matching & mapping) কতদূর সম্পন্ন তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। কমিশন চায় জরুরি ভিত্তিতে যেসব জেলা বা উপাবশ্যক কর্মে ঘাটতি আছে সেগুলোকে ত্বরান্বিত করা হোক; এ জন্য জেলা নির্বাচন আধিকারিক, ইআরও, এইআরও ও বিএলওদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
কমিশন জানিয়েছে, এবারে এসআইআর কার্যক্রম ডিজিটালাইজ়ড হবে—কাজ সহজ করতে বিভিন্ন অ্যাপ ও ডিজিটাল টুল চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যগুলিকে জানুয়ারির মধ্যে এসআইআর শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কারণ পরবর্তী বছর সেখানে বিধানসভা ভোট চলবে বলে আনুমানিক সময়সীমা রাখা হয়েছে। কমিশন সূত্রের কথাও আছে যে এসআইআর-এ নামভুল, ভূতুড়ে নাম, ডুপ্লিকেট বা মৃত্যু-প্রমাণিত ভোটারদের ছাঁটাই ও নতুন যোগের কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গ সিইও কমিশনকে বিএলওদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন—অনেক বিএলও (যাদের মধ্যে প্রচুরই স্কুল শিক্ষক) বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপ-প্রতিপত্তি বা হেনস্তার আশঙ্কায় দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। কমিশন আশ্বাস দিয়েছে যে কোনও রাজনৈতিক চাপ থাকলে প্রথমে কমিশনকে জানানোর পর প্রয়োজনীয় কাগজভিত্তিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পুলিশিং সহ সরকারি রসদ নিশ্চিত করা হবে। বিএলওদের কাজ মূলত বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফরম পৌঁছে দেওয়া, ফরম গ্রহণ ও উপস্থিতি যাচাই করা—তাই তাদের নিরাপত্তা ও মনোবল ধরে রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কমিশন আরও জানিয়েছে, ভোটার তালিকা-সংশোধনের প্রক্রিয়ায় ইআরও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত ও যাচাই-প্রক্রিয়া চালানো হবে। নির্বাচনী তফসিলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসআইআর-এর সময়সীমা ও ধাপসমূহ চূড়ান্ত করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে।










