নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ফের ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মালাক্কা প্রণালীর কাছে শনিবার যে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছিল, তা শক্তি বাড়িয়ে সোমবার সকালে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কথা। আবহবিদদের অনুমান, ২৭ থেকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যেই এই গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘সেনইয়ার’-এ রূপ নিতে পারে।
বর্ষা বিদায়ের পর বছরটির দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে এটি। যদিও সম্ভাব্য গতিপথ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আগামী সাত দিনে বাংলার জন্য কোনও বিপদ নেই বলে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক ধারণা, তামিলনাড়ু থেকে ওডিশার মধ্যবর্তী উপকূলে কোথাও ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হতে পারে।
বর্ষা বিদায় নেওয়ার পর উত্তর–পশ্চিম দিক থেকে ঠান্ডা ও শুকনো বাতাস ঢুকতে শুরু করলেও প্রবাহ খুব জোরালো হয়নি। ফলে বঙ্গোপসাগরের জলতলের তাপমাত্রা বিশেষ কমেনি। মালাক্কা প্রণালীর আশপাশে সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা এখনও প্রায় ২৭ ডিগ্রি। সেই সঙ্গে রয়েছে দুর্বল ‘উত্তুরে হাওয়া’। বাতাসের এই ধীর গতি জলীয় বাষ্পের স্তম্ভ ভেঙে যেতে দিচ্ছে না, যা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পক্ষে আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি করছে।
আবহবিদদের মতে, আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত নয়। তবে নভেম্বর–ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড়–প্রবণ সময় হওয়ায় পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। অতীতে এই সময়ে তৈরি বহু ঘূর্ণিঝড় ওডিশা ও বাংলার দিকে এগিয়েছিল। তবে এবার সম্ভাব্য ল্যান্ডফল তামিলনাড়ু থেকে ওডিশা পর্যন্ত বিস্তৃত রেখেই ধরা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমমুখী হলে তামিলনাড়ু উপকূলে আঘাত হানতে পারে। আর উত্তর–পশ্চিমমুখী হলে তার গতিপথ ‘উত্তুরে হাওয়া’র শক্তির উপর নির্ভর করবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ল্যান্ডফল অঞ্চল আরও স্পষ্ট হবে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার নাম হবে ‘সেনইয়ার’, যার অর্থ সিংহ। নামটি ঠিক করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে তৈরি হওয়া সব ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ দায়িত্বপ্রাপ্ত ১৩টি দেশের মধ্যে ইউএই-ই এ বার নাম প্রস্তাব করেছে।










