ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে রাজ্যের সব জেলাশাসককে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাইজেশনের নির্ধারিত শেষ তারিখ ৪ ডিসেম্বর হলেও তার বহু আগেই, ২৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনে সব কাজ শেষ করতে হবে। নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সময়মতো ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন না হলে পরবর্তী ধাপগুলিতে সমস্যা তৈরি হবে এবং জেলাশাসকদেরও এর দায় বহন করতে হতে পারে। কমিশনের দাবি, বিএলওদের বড় অংশ সাধ্যমতো কাজ করছেন, তবে এক শতাংশ কর্মী রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ভুল করলে তার দায়ও স্থানীয় প্রশাসনকে নিতে হবে।
এই চাপের মধ্যেই মাঠপর্যায়ের কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ। প্রশিক্ষণ চলাকালীন হঠাৎ কান্নায় ভেঙে পড়া, মাথা ঘোরা, ব্রেন স্ট্রোক কিংবা সেরিব্রাল অ্যাটাক—এমন ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। অনেক বিএলও জানিয়েছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম দেওয়া এবং পরে সেই ফর্ম সংগ্রহ করার পর অ্যাপে তথ্য আপলোড করতে গিয়ে প্রচণ্ড চাপ তৈরি হচ্ছে। ডেটা এন্ট্রির সময় ভুল হয়ে গেলে তা সংশোধনের সুযোগও সবসময় থাকছে না। কমিশনের ওয়েবসাইটে একদিনের জন্য ‘এডিট’ অপশন দেওয়া হলেও পরদিন সেটি আর পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। যাঁরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ নন, তাঁদের সমস্যাই সবচেয়ে বেশি।
সূত্রের খবর, কমিশন চায় নির্ধারিত সময়সীমার অনেক আগেই কাজ শেষ হোক। ফলে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখে SIR প্রক্রিয়া স্থগিতের অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, বিএলওদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে, তাই দমনমূলক পদক্ষেপ বন্ধ করে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে এবং সময়সীমা পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
অন্যদিকে এসআইআর চালিয়ে যাওয়ার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পুরো প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপের পাশাপাশি প্রশাসনিক চাপও ক্রমশ বাড়ছে বলে জানা গেছে।










