ছবি: রাজীব বসু
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন পর্বে ‘মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপ’-এর অভিযোগ তুলে সোমবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন একাংশ বুথ লেভেল অফিসার। সিইও অফিসের বাইরে ধর্না ও sloganeering ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। বিএলও অধিকার রক্ষা সমিতির সদস্যরাই এই বিক্ষোভে যোগ দেন বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিক্ষোভকারীদের দলে বেশ কয়েকজন বিএলও নন, তবুও তাঁরা আন্দোলনে শামিল হন।

বিক্ষোভকারীরা সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে চাইলে অ্যাপয়েন্টমেন্ট না থাকায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। অতিরিক্ত সিইও তাঁদের সঙ্গে কথা বললেও তা সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁরা দুপুর থেকে সিইও-র ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল)-এর নেতৃত্বে বাহিনী এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
এরই মধ্যে এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক তাপও বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়ে এসআইআর স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বিএলওদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারের পরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ মোট ১২টি রাজ্য ও ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে একসঙ্গে চলছে এসআইআর প্রক্রিয়া। সারাদেশে ৫ লক্ষ ৩২ হাজারের বেশি বিএলও কাজ করছেন। কমিশনের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে বিএলওদের উপর বাড়তি চাপ নেই। গড়ে প্রতিটি বিএলওর দায়িত্বে রয়েছে প্রায় ২৫০টি পরিবার এবং ৯০০-১০০০ জন ভোটার। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর—এক মাস সময় ধরে তাঁদের ফর্ম বিলি, সংগ্রহ ও ডিজিটাইজ়েশনের কাজ চলবে।
কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ কোটি ৬৬ লক্ষের বেশি। ৮০ হাজারেরও বেশি বিএলও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, সঙ্গে রয়েছেন রাজনৈতিক দলের প্রায় দেড় লক্ষ এজেন্ট। ইতিমধ্যেই ৭ কোটি ৬৪ লক্ষের বেশি ভোটারের হাতে ফর্ম পৌঁছে গিয়েছে। ডিজিটাইজ়ড হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি ফর্ম। কমিশন জানিয়েছে, কোনও বিএলওর উপর যদি রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক চাপের অভিযোগ ওঠে, জেলা প্রশাসন তা খতিয়ে দেখবে।

এসআইআরকে কেন্দ্র করে রাজ্যে প্রশাসনিক ব্যস্ততা যেমন বাড়ছে, তেমনই মাঠে নেমে বিরোধ ও ক্ষোভও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।










