লাইট মোটর ভেহিকেল ড্রাইভার (LMV) ছোট গাড়ির চালক। পেশাগত ছোট গাড়ি চালকদের সংগঠন ভারতীয় ট্যাক্সি ড্রাইভার ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন। যেখানে চালকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা, সমস্যা সমাধান এবং একে অপরকে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া চালকদের অধিকার ও সুবিধা আদায়ে কাজ করে। হোয়াটসঅ্যাপ,ফেসবুক, টেলিগ্রাম ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন।
এই সংগঠনটি প্রথম কয়েকজন ছোট গাড়ির চালক তৈরি করেন কোচবিহার জেলার দিনহাটা’য় সুজিত চক্রবর্তীর হাত ধরে। সুজিতবাবু এই সংগঠনের সেক্রেটারি। আর ইসলামপুরের সঞ্জয় ব্যাপারী হলেন সংগঠন প্রতিষ্ঠিত সদস্য। শিবুচন্দ্র দাস এই সংগঠনের সভাপতি।
সুজিতবাবু এই সংগঠনটির সরকারি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নিজের দুই কাঠা জমি সংগঠনের নামে স্বেচ্ছায় দান করেন।
রাজ্য জুড়ে সংগঠন

এই সম্পর্কে সুজিত চক্রবর্তী জানান, সমস্ত ছোট গাড়ি চালকদের সুবিধা অসুবিধার কথা চিন্তা করেই এবং চালকদের মধ্যে পরস্পর সহযোগিতার কথা চিন্তা করেই এই সংগঠনটির তৈরি করা হয়। এছাড়া এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি রক্তদান শিবির আয়োজন করে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এই সংগঠনের সদস্যরা।
সুজিতবাবু বলেন, “সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে প্রতিটি জেলাতেই আমাদের সদস্য রয়েছে। দুর্গাপুর, রামপুরহাট, ফরাক্কা, কালিয়াচক, মালদহ, গাজল, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, শিলিগুড়ি, দিনহাটা,কোচবিহার, কলকাতা, নামখানা, বাকুড়া, পুরুলিয়া, জামসেদপুর,ধানবাদ, দেওঘর, ভাগলপুর, দার্জিলিং, কালিংপং, হিলি প্রতিটি জায়গাতেই আমাদের সদস্য আছে”।
মেসেজ দিলেই সহযোগিতা

এই সংগঠনের এডমিন প্রদীপ মণ্ডল জানান, “বর্তমানে আমাদের সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার”। প্রদীপবাবু বলেন, “আমাদের সংগঠনের কোনও সদস্য গাড়ি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যেকোন জায়গায় সমস্যায় পড়লে, বা গাড়ির ব্রেকডাউন হলে একটা মেসেজ দিলেই সেই জায়গার সদস্যরা এগিয়ে আসে সহযোগিতা করার জন্য। যাত্রীদের সুরক্ষা দিকটি আগে দেখা হয়। তাই গাড়ির ব্রেকডাউন হলে যাত্রীদের পৌঁছানোর দায়িত্ব এই সংগঠনের”।
বিনা কারণে পুলিশি হেনস্থা থেকে মুক্তি

সংগঠনের ব্যাচ থাকলে বিনা কারণে পুলিশ আপনাকে বিরক্ত করবে না, এটি একটি সুরক্ষা চিহ্ন হিসেবে কাজ করবে। দুর্ঘটনা ঘটলে ড্রাইভারদের সহায়তা, রাস্তাঘাটে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সংগঠনের ড্রাইভার ভাইয়েরা পরস্পরকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করবেন। আর্থিক সাহায্য ও সামাজিক সম্মান, কোনো দুর্ঘটনায় ড্রাইভার ভাইয়ের আর্থিক ক্ষতি হলে, তিনি সংগঠনের থেকে আর্থিক সাহায্য এবং সামাজিক সম্মান পাবেন।
জনতার বিরক্তি এড়ানো

রাস্তায় কোনো সমস্যা হলে জনসাধারণ বা পুলিশ বিরক্ত করতে পারে। তবে, গ্রুপে পিন বার্তা দিলে কমপক্ষে ১০ জন ড্রাইভার এসে আপনাকে সহায়তা করবে, যা আপনার আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বাড়াবে। মানসিক সান্ত্বনা ও সহমর্মিতা
পারিবারিক সমস্যায় মন খারাপ থাকলে সংগঠন সবসময় পাশে থাকবে। এতে চালকদের মন হালকা হবে এবং মনোযোগ বাড়বে।
ভারতীয় ট্যাক্সি ড্রাইভার ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন সামাজিক মাধ্যমে চালকদের একত্রিত করে। এখানে তারা বিভিন্ন আলোচনা, সমস্যা এবং একে অপরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন।