উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূনে ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে টনস নদী। সেই স্রোতের মধ্যে আটকে পড়ে একটি ট্র্যাক্টর। ট্র্যাক্টর আঁকড়ে প্রাণ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন ১০ জন শ্রমিক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভেসে যায় ট্র্যাক্টরটি। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ছয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। দুর্ঘটনার ভয়াবহ ভিডিও ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে কীভাবে ট্র্যাক্টরটি নদীর মাঝে গিয়ে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মঙ্গলবার দেহরাদূনের বিকাশনগরে ঘটে এই দুর্ঘটনা। প্রশাসন জানিয়েছে, ট্র্যাক্টরে খননকারী শ্রমিকরা ছিলেন। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
প্রচণ্ড বর্ষণে সোমবার রাত থেকে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলপ্রদেশ। দেহরাদূন, মসূরী, মাল দেবতা এলাকায় ধসে বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। প্রেমনগরে আইন কলেজের কাছে একটি সেতুও ভেঙে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই এলাকা থেকে প্রায় ৪০০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। উত্তাল তমসা নদী ভাসিয়ে নিয়েছে দেহরাদূনের প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা।
ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) জানিয়েছে, এক ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে তাকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বলা হয়। দেহরাদূনে ঘণ্টায় প্রায় ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। আবহবিদদের মতে, এই বৃষ্টি আকস্মিক নয়, বরং পূর্বাভাস অনুযায়ীই হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডে কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। দেহরাদূন, নৈনিতাল, চম্পাওয়াতে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, পাশাপাশি চমোলী, উধম সিং নগর, বাগেশ্বর ও পিথোরাগড় জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিতে রাজ্যের নদীগুলির জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। অন্তত ২৫-৩০টি জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, বহু বাড়িঘর ও সরকারি সম্পত্তি ধসে গিয়েছে। জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশ উদ্ধারকাজে নেমেছে। তিনি ইতিমধ্যেই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।