ভারতের অন্যতম বৃহৎ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক অঞ্চল তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর আজ গভীর সংকটে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত আমদানি শুল্কের সিদ্ধান্তে অঞ্চলটির ২০,০০০ গার্মেন্ট কারখানা ও প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিকের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
তিরুপ্পুর প্রতি বছর ৪৪,৭৪৪ কোটি টাকার তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, যার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যায়। কিন্তু নতুন শুল্ক নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা আগের মতো অর্ডার দিচ্ছেন না। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠান পুরোনো অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করে দিচ্ছে। এতে উৎপাদন কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
তিরুপ্পুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক কুমার দুরাইসেত্তি জানিয়েছেন, “এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ হারাবেন, এবং ছোট ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।”
এই সংকট মোকাবিলায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্টালিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই সংকট শুধুমাত্র তামিলনাড়ু নয়, বরং দেশের গার্মেন্ট রপ্তানি খাত এবং শ্রমিক শ্রেণির ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের মোট পণ্য রপ্তানির ২০ শতাংশ গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তামিলনাড়ুর ক্ষেত্রে এই হার ৩১ শতাংশ। ফলে মার্কিন বাজারে শুল্ক বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত রাজ্যটির অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যদি এই শুল্ক স্থায়ী হয়, তবে ভারত তার গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট হারিয়ে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগীদের কাছে পিছিয়ে পড়তে পারে।
তিরুপ্পুরের গার্মেন্ট খাত শুধু রাজ্যের নয়, গোটা দেশের জন্য রপ্তানি আয় এবং কর্মসংস্থানের একটি বড় উৎস। এই খাত বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।










