অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস: সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা NEET-এর ফলাফল ঘোষণার পর বেশ কয়েক দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু বিভ্রান্তি কাটেনি। NEET প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং NEET ফলাফলে অনিয়ম সংক্রান্ত প্রশ্নগুলি লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবককে সমস্যায় ফেলেছে। যেমন- NEET 2024 বাতিল করা হয়েছে কি না? না কি NEET পরীক্ষা বাতিল হবে? পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হবে কি? বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। আদালত কী রায় দেবে, তার জন্য অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই!
এই বছর ২৪ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী NEET-এ বসেছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাও রয়েছে এবং ফলাফল থেকেও কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও এনটিএ প্রতিটি অভিযোগই অস্বীকার করেছে। কিন্তু পুনরায় পরীক্ষার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। জুলাইয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত। আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্টই বলবে। কিন্তু যেভাবে চাপ বাড়ছে তাতে NEET পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তও আসতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA) জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক এ বারের ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট বা নিট ২০২৪-এ তথাকথিত অনিয়মের জন্য সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (CBI) তদন্তের দাবি করেছে। NTA চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার যোশীর কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে, জুনিয়র ডাক্তাররা সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি ন্যায্য এবং স্বচ্ছ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধও জানায়।

আইএমএ জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্কের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলাফল সম্প্রচারে ব্যস্ত ছিল সংবাদমাধ্যম। সেই পরিস্থিতি পরীক্ষার ফলাফল সময়ের আগেই ঘোষণা করা হয়। এই তাড়াহুড়োর কারণ কী? তা ছাড়া কাট-অফেরও অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে।
চিঠিতে জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেছেন, “উপরোক্ত অনিয়মের জন্য আমরা NEET-এর ফলাফল নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাই৷ আমরা সমস্ত ছাত্রদের জন্য একটি ন্যায্য এবং স্বচ্ছ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ করছি।”
আইএমএ জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক কিছু পরীক্ষার্থীর সঠিক নম্বর না পাওয়া, ঘোষিত মার্কের অমিল এবং ওএমআর (OMR) শিটের তুলনায় গ্রেস মার্কের ধারণা এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, কিছু পরীক্ষার্থী ৭১৮ এবং ৭১৯ নম্বর পেয়েছে। এই নম্বর পাওয়ার পিছনে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। কারণ এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৮০টি প্রশ্ন থাকে। প্রত্যেকটির সঠিক উত্তরের জন্য ৪ (চার) নম্বর পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে কোনো পরীক্ষার্থী যদি সবকটি প্রশ্নের নির্ভুল উত্তর দেন, তিনি ৭২০ নম্বর পেতে পারেন। একটির জন্য কোনো উত্তর না করলে পেতে পারেন ৭১৬ নম্বর। অর্থাৎ, ৭১৯ অথবা ৭১৮ পাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। এক্ষেত্রে যে গ্রেস মার্কেক কথা বলা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী কোনো তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি।
পাশাপাশি, জুনিয়র চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেছেন, NEET-এর প্রশ্নপত্র অনেক জায়গায় ফাঁস হয়েছে, কিন্তু এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একই সময়ে, অনেক পরীক্ষার্থী তাঁদের স্কোরকার্ডে ওএমআর শিটের তুলনায় ভিন্ন নম্বর পেয়েছেন। জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ করেছে যে, NEET-এর ফলাফল নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যেও বিশেষ কোনো কারণ লুকিয়ে থাকতে পারে।
যাইহোক, মন্দের ভালো, নির্বাচনী উত্তেজনা কমতে সকলের মনোযোগ NEET ইস্যুতে পড়তে শুরু করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল, ABVP এবং অন্যান্য ছাত্র ইউনিয়ন, IMA জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ NEET বিতর্কের CBI তদন্তের দাবি করছে। এছাড়াও, NEET বাতিল এবং পুনরায় NEET করার দাবি বাড়ছে।



Be First to Comment