ভোট। প্রতীকী ছবি
নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকার বড় পদক্ষেপ নিল লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন একসঙ্গে করার লক্ষ্যে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা “এক দেশ, এক নির্বাচন” প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, শীতকালীন সংসদ অধিবেশনে এই বিল পেশ হতে পারে।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন উচ্চ-পর্যায়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইশতেহারে বিজেপি একসঙ্গে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার প্রথম ধাপ হিসেবে কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

কমিটির বিশাল আকারের ১৮,৬২৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন একসঙ্গে করার সুপারিশ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সাংবিধানিক সংশোধন প্রয়োজন হবে, তবে রাজ্যগুলির অনুমোদন ছাড়াই এই প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। এরপর পৌরসভা এবং পঞ্চায়েতের নির্বাচনগুলোকেও লোকসভা এবং বিধানসভার নির্বাচনের সাথে একত্রিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এই পর্যায়ে অর্ধেকের বেশি রাজ্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
“এক দেশ, এক নির্বাচন” বাস্তবায়নে ১৮টি সাংবিধানিক সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি এই পরিকল্পনার প্রতি আরও বেশি সমর্থন জোগাড় করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এই বিষয়টিকে সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রায়শই নির্বাচন হওয়ায় দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং একসঙ্গে নির্বাচন দেশের উন্নয়নের পথে সেই বাধা দূর করবে।”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও সম্প্রতি এই বিষয়ে জোর দিয়ে বলেছেন যে, এনডিএ সরকারের বর্তমান মেয়াদেই “এক দেশ, এক নির্বাচন” কার্যকর করা হবে।
তবে বিরোধী দলগুলির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি (আপ), এবং শিবসেনা (ইউবিটি) সহ বেশ কয়েকটি দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তাদের অভিযোগ, এই নীতিটি কেন্দ্রে শাসকদলকে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা প্রদান করবে। অন্যদিকে, এনডিএ-র সহযোগী দলগুলি যেমন জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং চিরাগ পাসওয়ানের দল এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে।
“এক দেশ, এক নির্বাচন” বাস্তবায়িত হলে, নির্বাচনী খরচ কমানো, প্রশাসনিক কার্যকলাপের উপর চাপ হ্রাস এবং সরকারগুলির পূর্ণ মেয়াদে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে। তবে বিরোধী দলগুলির বিরোধিতা এবং সংসদে বিলের ভবিষ্যত নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। এখন দেখা যাক, এই বিল শীতকালীন অধিবেশনে পাস হয় কি না এবং বিরোধী দলগুলি এর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়।




Be First to Comment