সিএএ-র মাধ্যমে কোনো পরিস্থিতিতেই নাগরিকত্ব হারাবেন না কোনো ভারতীয় নাগরিক। তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, নেওয়ার নয়…
নয়াদিল্লি: সোমবার ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) বাস্তবায়নের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক, কী রয়েছে এই আইনে?
ধর্মকে প্রথম বারের মতো নাগরিকত্বের জন্য সহায়ক করে তোলা এই আইন নিয়ে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেখেছে দেশ। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, সারা দেশে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয় এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে। বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং অ-বিজেপি রাজ্যগুলির তীব্র প্রতিরোধের ফলে একাধিক বার পিছু হঠতে হয় কেন্দ্রকে।
২০১৯ সালে আইনে পরিণত হলেও প্রায় সাড়ে চার বছর সময় ধরে তা কার্যকর হয়নি। তবে, ২০২০ সাল থেকে আইন কার্যকর করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এখন যেহেতু কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাই বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা অ-মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দিতে পারে সরকার। অর্থাৎ, শর্ত মেনে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই তিন দেশ থেকে আসা ছয়টি ‘সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায়ের মানুষকে। এই ছয় সম্প্রদায় হল – হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান।
বলে রাখা ভালো, এটি নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, সিএএ-র মাধ্যমে কোনো পরিস্থিতিতেই নাগরিকত্ব হারাবেন না কোনো ভারতীয় নাগরিক। তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন। কারণ, ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে সিএএ-র কোনো সম্পর্কই নেই বলে স্পষ্ট জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এদেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় সংবিধানে। সিএএ বা এই সম্পর্কিত কোনো আইন সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। আরও স্পষ্ট করে বললে, মুসলিম-সহ কোনো ভারতীয় নাগরিকদের উপর সিএএ-র কোনো প্রভাব পড়বে না।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই সিএএ বিল পাশ করিয়েছিল মোদী সরকার। ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ হয়েছিল। সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও সই করেছিলেন সিএএ বিলে। তবে কেন্দ্রের তরফে এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। তবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জোরাল দাবি করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে সিএএ বিধি লাগু হবেই। কোনওভাবেই এই আইন বলবৎ হওয়া আটকানো যাবে না। সেই মতোই লোকসভা ভোটের আগে কার্যকর হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
Be First to Comment