কুলটি : পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটিতে ভারত কোকিং কোল লিমিটেড বা বিসিসিএল এরিয়া ১২ তে দুটি কয়লা প্যাচ বা কয়লা প্রকল্প চালু হতে চলেছে। জানা গেছে,শবনপুর ও বরিরাতে এই দুটি প্যাচ জুন মাসেই বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ চালু করতে চলেছে । তারজন্য কয়লা উত্তোলনের টেন্ডার হয়ে গেছে। ওয়ার্কঅর্ডার শীঘ্রই দেওয়া হবে।
ইসিএল ও বিসিসিএলের যৌথ দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা সিএমডি সমীরন দত্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই দুই প্রকল্পে জুন মাসেই কয়লা উৎপাদন শুরু হতে চলেছে। এক সপ্তাহ আগেই তারজন্য টেন্ডারের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। শীঘ্রই ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এই দুটি প্রকল্প থেকে ৬০ লক্ষ টনের মত কয়লা তোলা হবে। সবমিলিয়ে ৬০০ কোটি টাকা মূল্যের হবে এই দুটি প্রকল্পের কয়লা। বরিরা প্রকল্পে ইতিমধ্যেই আমাদের কিছু জমি নেওয়া আছে। সেখানেই আগে কাজ শুরু হয়ে যাবে। বরিরাতে ৩৬ লক্ষ টন কয়লা উৎপাদনের জন্য আউটসোর্সিং কোম্পানিকে তিন বছর সময় দেওয়া হবে। শবনপুরেও তিন বছরের জন্যই বাকি প্রায় ২৪ লক্ষ টন কয়লা তোলা হবে। এখানেও আউটসোর্সিং করা হবে।
এই দুটি প্রকল্পের কয়লা অত্যন্ত উন্নতমানের হওয়ায় সেগুলি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঠানো হবে। সিএমডি বলেন, এর ফলে যাদের ব্যক্তিগত জমি বিসিসিএল নেবে তাদের কোল ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুযায়ী চাকরি ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। দুই একর জমি পিছু একজনের চাকরি দেওয়া হয়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ এই দুই প্রকল্পে কাজ পাবেন। এর ফলে ওই এলাকার আর্থিক উন্নয়ন যেমন হবে তেমনই রাজ্যের সরকারও উৎপাদিত কয়লা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

অন্যদিকে মা কল্যানেশ্বরী এন্ড চাপতোরিয়া প্রজেক্ট ল্যান্ড লুজার অ্যাসোসিয়েশনের ওই এরিয়ার নেতা শুভাসিস মুখোপাধ্যায় বলেন, শবনপুর এলাকায় অন্তত ৮০ একর জমি নিয়ে এই প্রকল্পের কাজ হবে। টেন্ডার হয়ে গেলেও, এখানকার সব জমির মালিকরা জানেন না যে তাদের জমিতে কয়লাখনি হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন জমির মালিক বলেন, আমি শুনেছি আমার জমিতে কয়লা খনি হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।
তাঁর দাবি, ” নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি না করলে আমরা কয়লা কাটতে এলে বাধা দেব।” এই বিষয়ে সিএমডি বলেন, সংস্থার তরফে শ্রমিক ইউনিয়ন ও একাধিক জমিদাতার সাথে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। যখন যে রকম প্রয়োজন হবে তখন সেভাবেই জমি নেব। আগে থেকেই সবার জমি নিয়ে আমরা রাখি না। আর কোল ইন্ডিয়ার জমি সংক্রান্ত বিষয় যে নির্দেশ আছে তাই এখানেও মানা হবে। যে কেউ প্রয়োজনে আলোচনাও করতে পারেন ওই এরিয়ার জিএম বা আধিকারিকদের সঙ্গে।
কুলটির প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা অবশ্যই এই জেলা বা রাজ্যের জন্য ভালো খবর। এই দুই নতুন খনি প্রকল্পে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। স্বাভাবিক ভাবেই এরজন্য স্থানীয় স্তরেও আর্থিক উন্নয়ন হবে। যদি এ ব্যাপারে বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে কোনও রকম সহযোগিতা চান তাহলে নিশ্চয়ই পাশে থাকবো। তাদেরকে সবরকম সহযোগিতা করব।”



Be First to Comment