অভিষেক সেনগুপ্ত, জলপাইগুড়ি: সমস্যা একাধিক। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি)-র দাবি আজও অধরা। তবে সমস্যার রেশ পড়েনি উৎপাদনে। উত্তরবঙ্গে মোট চা উৎপাদনের সিংহভাগই আসছে ক্ষুদ্র চা বাগানগুলো থেকে। তবে কাঁচা পাতার দাম না পাওয়া-সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত ক্ষুদ্র চা চাষিরা। দ্রুত এমএসপি চালুর দাবি করেছে ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি।
উত্তরবঙ্গে বর্তমানে ক্ষুদ্র চা বাগানের সংখ্যা কম বেশি পঞ্চাশ হাজার। বটলিফ ফ্যাক্টরি রয়েছে ২৩৪টি। তিন ‘টি’-এর রাজত্ব উত্তরবঙ্গে বিকল্প কর্মসংস্থানের দিশা দেখিয়েছে ছোটো চা বাগানগুলো। এমনটাই দাবি সমিতির নেতাদের।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক তথা কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ” কয়েক লক্ষ মানুষের জীবন ও জীবিকা এই বাগানগুলোকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।” তাঁর দাবি, ২০২২ সালে উত্তরবঙ্গের মোট চা পাতার উৎপাদনের ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৪০৪.৪২ মিলিয়ন কেজি এসেছে ছোটো বাগানগুলো থেকে। গত একবছরে আরও ৪ শতাংশ উৎপাদন বেড়েছে। এদিকে দার্জিলিংয়ে বড় বাগানে চায়ের উৎপাদন কমেছে বলেও দাবি সমিতির সম্পাদকের। তবে বিগত পাঁচ বছর ধরে কাঁচা পাতার দাম বাড়েনি। ফলে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়ছেন তারা। কেজি প্রতি কাঁচা চা পাতার দাম কয়েক বছর ধরেই ১৩-১৫ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
এদিকে কেজি প্রতি উৎপাদন খরচ কমবেশি ২২ টাকা বলে দাবি সমিতির। সেক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ২৫ টাকা করলে আর্থিক সংকটের মুখে পড়তে হবেনা ক্ষুদ্র চা চাষিদের। কেন্দ্রের কাছে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবি ফের করলেন ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক।
বিজয় গোপাল চক্রবর্তী, সম্পাদক, জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি
এতদিন কিসান ক্রেডিট কার্ড, পিএম ফসল বিমা যোজনা ও কৃষি সিঞ্চাই যোজনার সুবিধে পেতেন না ক্ষুদ্র চা চাষিরা। গত শনিবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে জনসভায় এসে এই তিন প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র চা চাষিদের আনার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ প্রসঙ্গে বিজয় গোপালবাবু বলেন, “কেন্দ্রের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস বা কাঁচা চা পাতার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেঁধে দেওয়া না হলে চা চাষিদের আর্থিক সুরাহা সম্ভব নয়। এমএসপি চালু হলে উত্তরবঙ্গের সাত লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।”
Be First to Comment