অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস: ভারতের ইস্পাত শিল্পের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কোকিং কয়লাকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেছে নীতি আয়োগ। “Enhancing Domestic Coking Coal Availability to Reduce the Import of Coking Coal” শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইস্পাত উৎপাদনে কোকিং কয়লার ব্যয় ৪২ শতাংশ পর্যন্ত, যা পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং বহু কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী শিল্পের জন্য অপরিহার্য। ভারতের ২০৭০ সালের মধ্যে নেট জিরো নির্গমন লক্ষ্য অর্জনের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের মধ্যম মানের কোকিং কয়লার (১৬.৫ বিলিয়ন টন) সম্পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।
ভারতে ৫.১৩ বিলিয়ন টন প্রধান কোকিং কয়লা এবং ১৬.৫ বিলিয়ন টন মধ্যম কোকিং কয়লার ভূতাত্ত্বিক মজুত থাকা সত্ত্বেও, এই সম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে, একত্রিত ইস্পাত কারখানাগুলি ৫৮ মিলিয়ন টন কোকিং কয়লা আমদানি করেছে, যার খরচ প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই কোকিং কয়লাকে গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারতের মতোই ইইউ-ও তাদের সবুজ শক্তি রূপান্তরের জন্য লিথিয়াম, কোবাল্ট, এবং বিরল খনিজের মতো ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ঘোষণা করেছে। তবুও, তাদের কোকিং কয়লার আমদানি নির্ভরতা ভারতের ৮৫ শতাংশের তুলনায় ৬২ শতাংশে সীমাবদ্ধ।
ভারতের জন্য নীতি সুপারিশ অনুযায়ী, কোকিং কয়লাকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে, বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি সহজ হবে এবং ইস্পাত শিল্পের জন্য কাঁচামালের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। প্রতিবেদনে সরকারি কয়লা ধোয়ানোর কারখানাগুলির কম কার্যক্ষমতার পাশাপাশি বেসরকারি কারখানাগুলির উচ্চ কার্যক্ষমতা উল্লেখ করা হয়েছে। বেসরকারি খাতের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে উৎপাদন ও মানোন্নয়ন সম্ভব।
দেশীয় কোকিং কয়লার সাপ্লাই চেন শক্তিশালী হলে আমদানির উপর নির্ভরতা কমবে, ইস্পাত উৎপাদনের খরচ হ্রাস পাবে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
Be First to Comment