সিআইএসএফ, নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ। নিজস্ব ছবি
নিজস্ব সংবাদদাতা, আসানসোল : পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল বারাবনি থানার জামগ্রাম পঞ্চায়েতের সালানপুর এরিয়ার ইসিএলের বেগুনিয়া কোলিয়ারিতে সিআইএসএফ, নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের উপর হামলার চালানোর অভিযোগ উঠল কয়লা চোরেদের বিরুদ্ধে।
বুধবার ভোরবেলা ও সকালে মোট দু’দফায় হওয়া এই হামলার ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কয়লা চুরিতে বাধা পেয়ে ৫০০/৬০০ জনের কয়লা চোরের একটি দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। এই হামলায় ইসিএলের এরিয়া সিকিউরিটি ইনচার্জ ও পুলিশের দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কয়লা চোরেরা ইট পাটকেল ছুড়ে এই গাড়ি দুটি ভাঙচুর করা হয়। বেগুনিয়া কোলিয়ারির আশপাশের এলাকা থেকে মোট ৬ মেট্রিক টন চোরাই কয়লা সিআইএসএফ ও নিরাপত্তা রক্ষীরা আটক করে।
নিরাপত্তা রক্ষীরা হামলা চালানোর অভিযোগে কোলিয়ারি এলাকা থেকে সাতজনকে আটক করে বারাবনি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
এই হামলার ঘটনায় সবমিলিয়ে তিনজন ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছেন। ইসিএলের তরফে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে বুধবার সকালে বারাবনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতে পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করার পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী বা সিআইএসএফের জওয়ানরা এদিন সকালে বেগুনিয়া কোলিয়ারি এলাকায় কয়লা চুরি আটকাতে অভিযান চালায়। সেই সময় কয়লা চোরেরা সিআইএসএফ জওয়ানদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। কয়লা খনিতে কয়লা চুরিতে বাধা পেয়ে ইসিএলে নিরাপত্তারক্ষীদেরকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে কয়লা চোরেরা। এই ঘটনায় ইসিএলের দুই নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ।
এই প্রসঙ্গে ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার সিকিউরিটি ইনচার্জ দিলীপ প্রসাদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বেগুনিয়া কয়লাখনিতে বুধবার ভোরবেলা ৫০০/৬০০ জনের কয়লা চোরের একটি দল কয়লা চুরি করতে এসেছে বলে ইসিএল ও সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন। সেই খবর পেয়ে ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীরা কোলিয়ারিতে পৌঁছায়। কয়লা চুরিতে বাধা পেয়ে সেই নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে চোরেরা ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বারাবনি থানার পুলিশ। এর পর পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে কয়লা চোরেরা। এই ঘটনায় ২ জন নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, খনি এলাকা থেকে ৬ মেট্রিক টন চোরাই কয়লা আটক করা হয়েছে। মোট ৭ জনকে আটক করে বারাবনি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনা নিয়ে ইসিএলের তরফে বারাবনি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পরে সকালের দিকে বারাবনি থানার পুলিশ ও সিআইএসএফ ও ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীরা কোলিয়ারি এলাকা থেকে সাতজনকে আটক করে বারাবনি থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় নতুনডিহি গ্রামের কাছে আবার কয়লা চোরেরা তাদের গাড়ির উপর হামলা চালায়। সেখানে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। কিন্তু পুলিশ হামলাকারীদের তাড়া করে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, গোটা ঘটনা নিয়ে ইসিএলের তরফে বারাবনি থানায় নির্দিষ্ট করে কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোলিয়ারিতে কয়লা চুরি হওয়ার খবর পেয়ে সেখানে ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষী ও সিআইএসএফ গেলে তাদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Be First to Comment