কলকাতা: বীরভূমের দেউচা-পাচামি কয়লা প্রকল্পে শিলাস্তর অপসারণের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার একটি সংস্থাকে নিয়োগ করেছে। এই প্রকল্পের ৩৭৬ একর জমি থেকে কঠিন এবং গাঢ় রঙের ব্যাসাল্ট শিলা সরানোর কাজ শুরু হবে। এটি প্রকল্পের প্রথম ধাপে কয়লা উত্তোলনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
একটি জাতীয় টেন্ডারের মাধ্যমে সংস্থা নির্বাচন করা হয়েছে। শিলাস্তর থেকে প্রাপ্ত ব্যাসাল্টের আয় রাজ্য সরকার এবং বেসরকারি সংস্থার মধ্যে ৭১:২৯ অনুপাতে ভাগ হবে। নবান্নে প্রধান সচিব মনোজ পান্তের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে এই প্রকল্পের সাফল্যের জন্য বিশদ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ নাগাদ ব্যাসাল্ট উত্তোলনের কাজ শুরু হবে এবং ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কয়লা উত্তোলনের জন্য বৈশ্বিক টেন্ডার আহ্বানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

প্রকল্পটির প্রথম ধাপে ৩৭৬ একর জমিতে থাকা ১০০ থেকে ৩৫০ মিটার পুরু শিলাস্তর সরিয়ে নেওয়া হবে। এর নীচে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন টন কয়লার মজুত রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা আশা করছেন, শিলাস্তর সরানোর পর কয়লা উত্তোলনে অনেক সংস্থার আগ্রহ দেখা যাবে।
শিলাস্তর থেকে প্রাপ্ত ব্যাসাল্টের বাজারমূল্য আনুমানিক ৭,০০০ কোটি টাকা, যার ৭১ শতাংশ রাজ্যের কোষাগারে জমা হবে। প্রথম পর্যায়ের এই প্রকল্প থেকে রাজ্য ৫,০০০ কোটি টাকা আয় করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে, যা আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরকারের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হতে পারে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সরকার তিনটি বড় প্রকল্পের উপর জোর দিচ্ছে — দেউচা-পাচামি কয়লা প্রকল্প, তাজপুর গভীর সমুদ্রবন্দর এবং শিল্প করিডর। তবে তহবিল সংকট এবং জমি অধিগ্রহণের সমস্যায় অন্য দুটি প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। দেউচা-পাচামি কয়লা প্রকল্পই একমাত্র জায়গা যেখানে দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব, তাই এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে।




Be First to Comment