আলোচনা সভার উদ্বোধনে মন্ত্রী মলয় ঘটক। নিজস্ব ছবি
নিজস্ব সংবাদদাতা: আসানসোল-দুর্গাপুরের শিল্পাঞ্চলে “পরিবেশগত স্থিতিশীলতা বা স্থায়িত্ব বা ইকোলজিক্যাল সাসটেইনেবিলিটি” শীর্ষক সপ্তম আলোচনা সভা শনিবার অনুষ্ঠিত হল আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সহযোগিতায় বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল।
এ দিন সকালে রাজ্যের আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, এস সুরেশ কুমার, আইএএস (চেয়ারম্যান, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি), বি পি সিং, ডিরেক্টর-ইন-চার্জ (বার্নপুর ও দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট, সেল ও চেয়ারপার্সেন দুর্গাপুর আসানসোল ফোকাস কমিটি) এবং গৌতম রায় (সভাপতি, বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও প্রেসিডেন্ট -কর্পোরেট, আরপিএসজি গ্রুপ) ও অন্যান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়।
উদ্বোধনী ভাষণে মলয় ঘটক বলেন, “শিল্পাঞ্চলে পরিবেশগত স্থায়িত্বের উপর এই আলোচনা ফোরামের আয়োজন করার জন্য আমি বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশংসা করছি। প্রতি বছর তারা আসানসোল-দুর্গাপুরের এর আয়োজন করে থাকে। আমরা সকলেই অবগত যে আসানসোল প্রাচীনতম স্টিল শহরগুলির মধ্যে একটি। এই আলোচনা সভায় ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে সেল বার্নপুর এবং দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরণে ৩৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে। আমি মন্ত্রী হিসাবে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে অনুরোধ করব এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেল্টে সরকারের সঙ্গে কাজ করা ও সমস্যাগুলি সমাধান করার জন্য।”
এস সুরেশ কুমার বলেন, “পরিবেশগত ভারসাম্য রাখার ক্ষেত্রে আমাদের একটি প্রধান ভূমিকা রয়েছে। উন্নত দেশগুলির তাপবিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুতে আরও মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। ভারতের মতো দেশে ইকো সাসটেইনেবিলিটি পৌঁছানোর একমাত্র উপায় হল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কার্বন নিঃসরণ কমানো। আমরা ইভি স্টেশন চালু করার চেষ্টা করছি। বেশিরভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন রাতে ও দিনের বেলায় হয়। এর পাশাপাশি আমরা একটি ১ হাজার এমজির পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প তৈরি করছি।”
অনুষ্ঠানে বিপি সিং বলেন, “এই দুই শিল্পাঞ্চলে শিল্পোন্নয়ন ও শিল্পের বৃদ্ধির ক্ষেত্রেএই বিষয়টি একটি জ্বলন্ত বিষয় বা বার্নিং ইস্যু। ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে ভারতে প্রায় ৬ থেকে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে সব শিল্পই গড়ে উঠবে। যে কোনো শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য তিনটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলি হল অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব, পরিবেশ স্থায়িত্ব এবং সামাজিক স্থায়িত্ব।”
এ দিনের আলোচনা সভা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে গৌতম রায় বলেন, “আমরা এই দুই শিল্পাঞ্চল থেকে যে সমর্থন এবং অংশগ্রহণ পেয়েছি তাতে আমরা অত্যন্ত উৎসাহিত৷ তাই এই অঞ্চলে আমরা আরও সক্রিয় থাকার জন্য দুর্গাপুর আসানসোলকে নিয়ে একটা ফোকাস কমিটিও তৈরি করেছি। পশ্চিম বর্ধমান জেলা হল পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রধানত শহর-খনি- শিল্প জেলা।” তিনি আরোও বলেন, দুর্গাপুর-আসানসোলে বিনিয়োগের জন্য পছন্দের গন্তব্য হিসাবে সম্ভাবনা রয়েছে। বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এ বছর সাসটেইনেবিলিটি ফোরামও গঠন করেছে।
ড. দেবাশিস সরকার বলেন, (অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও এইচওডি, এমই, আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ) “একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা পড়ুয়াদের পরিবেশগত স্থায়িত্ব বিষয়ে সচেতন করি। যেমন বিভিন্ন দিনে বৃক্ষরোপণ, জল সংগ্রহ, ভূগর্ভস্থ জল রিচার্জিং ও জল দূষণের উপর গবেষণা করানো হয়।”
পার্থ পি চট্টরাজ (জিএম-এইচআর, ইন্ডিয়া পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড এবং কো-চেয়ারপার্সন, দুর্গাপুর-আসানসোল ফোকাস কমিটি, বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) ডা. জি এস পান্ডা ( ভাইস প্রিন্সিপাল আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ), ড. সব্যসাচী সাহা (সহযোগী অধ্যাপক, রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রি), কৌশিক বিশ্বাস, ( হোলটাইম ডিরেক্টর – সিপিএল, সিইও – সিপিএল এবং আইসিএমএল এবং কো-চেয়ারপার্সেন , দুর্গাপুর-আসানসোল ফোকাস কমিটি, বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি)-সহ অন্যরা এ দিন উপস্থিত ছিলেন।
Be First to Comment