জামুড়িয়া : মৃত ব্যক্তির নামে জমি ‘রেজিস্ট্রি’ করিয়ে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। আসানসোলের জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত কেন্দা ফাঁড়ি অঞ্চল থেকে জমি দুর্নীতির ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধৃত নরেশ পাল, বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজয়নগর গ্রামের বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে খবর। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় শিল্পাঞ্চল জুড়ে শোরগোল পড়েছে।
আসানসোল শিল্পাঞ্চল ও খনি এলাকার দীর্ঘদিনের অভিযোগ যে, জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষের পৈত্রিক জমি হাতছাড়া হওয়ার মুখে।
সরকারি রেকর্ডে হেরফের, জাল কাগজ তৈরি, মৃত ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি সহ, সব মিলিয়ে এই শিল্পাঞ্চলে বহু বছর ধরেই জমি মাফিয়া চক্রের দাপট রয়েছে। মৃত মালিকেরা কী ভাবে রেজিস্ট্রি করলেন?
অভিযোগকারী কেন্দা গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, খতিয়ান নং: ৪৩৪, মৌজা: চিঁচুড়িয়া, জেএল নং: ৬৯, মোট জমি: ৩.২৩ একর। এই পৈত্রিক জমি হঠাৎ করেই নরেশ পালের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়ে গেছে।
কিন্তু এখানে বিস্ময়ের বিষয় যে, মৃত্যুঞ্জয়বাবুর পিতা গিরিধারী গঙ্গোপাধ্যায় ২০০২ সালে মারা যান। তার জ্যাঠামশাই চন্দ্রধর গাঙ্গুলী ২০০৭ সালে মারা গেছেন। তবুও অভিযোগ অনুযায়ী ২০১৯ সালে এই দু’জন মৃত ব্যক্তি নরেশ পালের নামে তাদের জমি রেজিস্ট্রি করলেন?
আরও অভিযোগ, এ বিষয়ে বারবার বিএলআরও অফিসে যাওয়া, নথি জমা দেওয়া, আবেদনের পর আবেদন, সবই নাকি করা হয়েছে। কিন্তু হয়রানি ছাড়া কিছুই পাননি মৃত্যুঞ্জয় গাঙ্গুলি ।
এই এলাকায় বড় জমি হাতিয়ে নেওয়ার একটা বড় চক্র চলছে, এমন অভিযোগ মৃত্যুঞ্জয়বাবুর। তিনি বলেন, আমাদের মতো আরও বহু পরিবারের জমি জালিয়াতির মাধ্যমে হাতবদল করা হয়েছে। কোথাও ভয় দেখিয়ে , কোথাও বা টাকা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। প্রতি পদে প্রশাসনিক উদাসীনতা চোখে পড়েছে।
নরেশ পালকে গ্রেফতারের পর পুলিশ সূত্রের খবর পাওয়া গেছে, জাল রেকর্ড সংশোধন, মৃত ব্যক্তির নকল বা জাল সই, নকল পরিমাপ নথি ও রেকর্ড রুমের দুর্নীতি রয়েছে। এর পেছনে একটি বড় চক্র সক্রিয় থাকতে পারে পুলিশ মনে করছে।
তবে, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই শিল্পাঞ্চলে জমি নিয়ে একটি সুসংগঠিত মাফিয়া নেটওয়ার্ক কাজ করছে। তবে তদন্ত এগোলে আরও অনেক নাম উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।










