প্রায় এক সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক হতাহতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হল পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে উচ্চস্তরের বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উভয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা।
পাকিস্তান জানিয়েছে, আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল সীমান্তে সন্ত্রাস দমন ও স্থিতিশীলতা ফেরানো। ইসলামাবাদের দাবি, আফগান ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালাচ্ছে। অন্যদিকে, কাবুলের বক্তব্য—তারা কোনো জঙ্গিকে আশ্রয় দিচ্ছে না।
গত শুক্রবার শেষ হয় ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তানি সেনা সূত্রে জানা যায়, হামলার লক্ষ্য ছিল হাফিজ গুল বাহাদুর গোষ্ঠীর ঘাঁটি, যাদের পাকিস্তান সম্প্রতি মির আলি এলাকায় আত্মঘাতী হামলার জন্য দায়ী করেছে। পাকিস্তানের দাবি, এই অভিযানে বহু জঙ্গি নিহত হলেও কোনও সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়নি।
কিন্তু আফগান প্রশাসনের দাবি, ওই বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও স্থানীয় ক্রিকেটাররাও ছিলেন। এর প্রতিবাদে আফগান ক্রিকেট বোর্ড পাকিস্তানের সঙ্গে আসন্ন সিরিজ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়।
শনিবার পাকতিকায় হাজারো মানুষ নিহতদের জানাজায় অংশ নেন। বক্তৃতায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন তালিবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের বারংবার সীমান্ত লঙ্ঘন ও সার্বভৌমত্ব হরণের এই কাজ ইচ্ছাকৃত উসকানি।”
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির শনিবার খাকুলের পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে এক বক্তব্যে বলেন, “আফগানিস্তানকে স্থায়ী সংঘাত নয়, পারস্পরিক নিরাপত্তা বেছে নিতে হবে। তালিবানকে অবশ্যই তাদের আশ্রিত গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।”
দুই দেশের মধ্যে ২,৬১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত ‘দুরান্ড লাইন’ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ এখনও মেটেনি। আফগানিস্তান কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই সীমান্তকে স্বীকৃতি দেয়নি।










