উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,কুলতলি : রিলস বানানোর নেশাই কি জীবন ছিনিয়ে নিল এক চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়ার, সেই প্রশ্নই আবার উঠে এল কুলতলির এক পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনায়।
ফেসবুকে ভিডিয়ো বানানোর নেশা ছিল। বাবার সঙ্গে ভিডিয়ো বানাত সে। সঙ্গে চলছিল স্কুল। কিন্তু হঠাৎ চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল বছর দশেকের ছেলে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র পল্লব নস্করের মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
কুলতলি থানার ২ নম্বর জালাবেড়িয়া এলাকার ঘটনা। সোমবার প্রতিদিনের মতোই সকালে উঠে স্কুলে যায় পল্লব। বিকেলে বাড়ি ফিরে আসে সে সময় মতোই। স্কুল থেকে ফিরে মায়ের কাছে খাবার চায় সে। তারপর একা একাই খেলতে থাকে। মা গিয়েছিলেন পাশের কাকার বাড়িতে রান্নার কাজে। কাকার বছর সাতেকের মেয়ে তখন পল্লবের সঙ্গেই খেলতে আসে। কিন্তু হঠাৎ রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে চমকে যায় সে। ভিতরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় দাদাকে।
ছোট্ট মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনে মা-কাকিমারা ছুটে আসেন।ঘরে ঢুকেই দেখেন, ঘরের ছাদের বাঁশে দড়ি দিয়ে ঝুলছে পল্লব। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে জয়নগর-কুলতলি ব্লক গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মৃত পল্লব এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। বাবার সঙ্গে মিলে ভিডিয়ো বানিয়ে নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতো সে। পল্লবের নামে একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে, যেখানে প্রায় ১৯ হাজার ফলোয়ার আছে। খেলার ছলে ভিডিয়ো তৈরি করে পোস্ট করত নিয়মিত। কিন্তু হঠাৎ আত্মহত্যা করলো কেন বুঝতে পারছে না কেউ। কোনও অস্বাভাবিক ঘটনার ইঙ্গিত মেলেনি।এই ঘটনার খবর পেয়ে কুলতলি থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ পাঠানো হয় ৷ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে কুলতলি থানার পুলিশ।
কেন এই কিশোর এমন চরম পদক্ষেপ নিল, সেই কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।আর পল্লবের আকস্মিক এই মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তার পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকার বাসিন্দারা মঙ্গলবার বলেন, হাসিখুশি ও খুব মিশুকে পল্লব এমন কিছু করতে পারে, তা তারা ভাবতেই পারছে।আর এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।