জলপাইগুড়ি: ঐতিহ্যবাহী বৈকুন্ঠপুর রাজএস্টেটের পাঁচ শতাধিক বছরের পুরনো নন্দোৎসব, দুর্গা পুজোর কাঠামো পুজো ও তিন দিনের মনসা পুজোর সূচনা হল রবিবার থেকে। সকাল থেকেই ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে যায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ পরিবারের সদস্যরাও।

রাজএস্টেটের ইষ্টদেবতা শ্রীকৃষ্ণের পুজোর মধ্য দিয়েই শনিবার রাতে শুরু হয় এই উৎসব। রবিবার সকালে ইষ্টদেবতার সামনে অনুষ্ঠিত হয় ‘দধিকাদো’ খেলা, যেখানে কাদামাটির খেলায় অংশ নেয় এলাকার কমবয়সীরা। এই বিশেষ কাদামাটি পরে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করবেন মৃৎশিল্পীরা।
একইসঙ্গে শুরু হয়েছে মনসা পুজোও। রাজ পরিবারের প্রবীণ সদস্য প্রণত বসু ও পুত্রবধূ লিন্ডা বসু পূজা অর্চনায় অংশ নেন। রাজপুরোহিত শিবু ঘোষাল জানান, পাহাড়পুর, হলদিবাড়ি-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শিল্পীরা এসে বিষহরি গান পরিবেশন করবেন। পাশাপাশি বসবে মেলা। প্রচলিত নিয়ম মেনেই পূজার যাবতীয় আচার পালিত হচ্ছে।
এই পুজোয় মা মনসার পাশাপাশি মনসামঙ্গল কাব্যের বিভিন্ন চরিত্র ও জারুৎকারু মুনির পূজাও হয়। হারিয়ে যেতে বসা বিষহরি গানকে ঘিরে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন অনেকেই। লিন্ডা বসু বলেন, “আজ থেকেই দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। ধারা মেনেই সব আয়োজন হচ্ছে।”

প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা জানান, শিষ্য সিংহের আমলে পাঁচ শতাব্দীরও আগে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। বৈকুন্ঠপুরের দুর্গা প্রতিমা অনন্য তপ্ত কাঞ্চন বর্ণা। উত্তরবঙ্গের জনজীবনে মনসা পুজোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, আর রাজএস্টেটের এই পুজো ও মেলা আজও স্বমহিমায় উজ্জ্বল।