আসানসোল: পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রেলপারের হাজিনগর এলাকায় আবারও সিবিআইয়ের অভিযান। ঠিক তিনদিনের মাথায় বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির অভিযানকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
মানব পাচার বা হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রানি খাতুন এবং মহম্মদ বিলালকে নিয়ে এদিন সকাল থেকে হাজিনগরের বিভিন্ন এলাকায় সিবিআই দলের অভিযান চালায়। তাদের সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার আধিকারিক মুকেশ কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের সিবিআইয়ের একটি দল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরকে সঙ্গে নিয়ে হাজিনগরের একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। সেই বাড়ির বাসিন্দা রানি খাতুন ও মহঃ বিলাল নামে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, এই দম্পতি এলাকার বিভিন্ন অংশে গরিব মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের বিক্রি করে দিত। এর পেছনে বড় একটা চক্র রয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালে বর্ধমানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিলো। রেলপারের একটি মেয়েকে সেখানে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের মাত্র দু/তিন দিনের মধ্যে তাকে অন্য একজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই মেয়ে কোনোক্রমে পালিয়ে রায়না থানায় আসে ও অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কোন পদক্ষেপ না হওয়ায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান। আদালত বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়।
গ্রেফতার করার পরের দিন অর্থাৎ সোমবার দম্পতিকে কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করা হয়। এরপরে আদালতের নির্দেশে সিবিআই তাদের হেফাজতে নেয়। দুদিন ধরে দম্পতিকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। আরো তথ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করার জন্য বুধবার ধৃত দম্পতিকে নিয়ে আসানসোলের রেলপারের হাজিনগরে আসে সিবিআইয়ের দল।
সিবিআইয়ের আধিকারিকরা মনে করছে , এই দম্পতির পেছনে মানব পাচারের বড় কোন চক্র রয়েছে। এখনো পর্যন্ত বহু মেয়েকে বিয়ের নামে বিক্রি করা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা মনে করছেন ।
জানা গেছে, রেলপারের বালু ময়দান, মকু মুহল্লা, হাজিনগর এবং বাবুতলাও এলাকায় মানব পাচারের একটি নেটওয়ার্ক বা চক্র সক্রিয় রয়েছে। সিবিআই দম্পতির সূত্র ধরে সেই চক্রের সদস্যদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।